মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন।
প্রথা অনুযায়ী, আগে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেওয়া হতো। এরপর শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত জানাতেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন সফরে থাকায় তা হলো না। তবে ফল প্রকাশ উপলক্ষে লন্ডন থেকে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান শিক্ষামন্ত্রী।
গতবছর এ পরীক্ষায় ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন। সেই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে দশমিক ৪ শতাংশ ৪৩। তবে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৫ হাজার ৩৫ জন। ২০১৭ সালে ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল, যাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার এসএসসি ও সমানের পরীক্ষায় ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৯৪১ জন ছাত্র ও ৮ লাখ ৮২ হাজার ২২৪ জন ছাত্রী।
তিনি বলেন, ‘আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসিতে পাসের হার ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৩ ও কারিগরি বোর্ডে ৭২ দশমিক ২৪ শতাংশ।’
বিদেশ কেন্দ্রে পাসের হার ৯১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এ ছাড়া এবার ২ হাজার ৫৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছে এবং ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করতে পারেনি বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৪ হাজার ৫৫৬ জন। মাদরাসা বোর্ডে ৬ হাজার ২৮৭ ও কারিগরি বোর্ডে ৪ হাজার ৭৫১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। গত বছর এসএসসিতে এক লাখ ২ হাজার ৮৪৫ জন, দাখিলে ৩ হাজার ৩৭১ ও কারিগরিতে ৪ হাজার ৭৫১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
গত কয়েক বছরের মতো এবারও এসএসসিতে পাশের হারে শীর্ষে রয়েছে রাজশাহী বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বোর্ড। এ বোর্ডে ২৯ হাজার ৬৮৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে
এবার এসএসসিতে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৫ মার্চ শেষ হবে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয় এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৬ মার্চ।
এবার এই পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ছাত্র।
যেভাবে ফলাফল পাবেন
নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ছাড়াও www.educationboardresults.gov.bd ঠিকানায় ফলাফল পাওয়া যাবে। মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে।
মোবাইল থেকে ফল জানতে মেসেজ অপশনে গিয়ে পরীক্ষার নাম (ssc/dakhil) লিখে স্পেস দিয়ে ইংরেজিতে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সন 2019 লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে ফলাফল জানানো হবে।
৭ থেকে ১৩ মে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন
এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আগামী ৭ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা গেছে, টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল দিয়ে ফল যাচাই করার আবেদন করা যাবে।
আবেদন করতে মোবাইলে মেসেজ অপশনে গিয়ে আরএসসি (RSC) লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে ফি দিতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আবেদন ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর দেয়া হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে মেসেজে গিয়ে আরএসসি (RSC) লিখে স্পেস দিয়ে ইয়েস (YES) লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে নিজ মোবাইল ফোন নম্বর লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে।
যেসব বিষয়ে দুটি পত্র (বাংলা ও ইংরেজি) রয়েছে সেসব বিষয়ে একটি বিষয় কোডের (বাংলার জন্য ১০১, ইংরেজির জন্য ১০৭) বিপরীতে দুটি পত্রের জন্য আবেদন হিসেবে গণ্য হবে এবং আবেদন ফি হিসেবে ২৫০ টাকা লাগবে।
একই এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে কমা দিয়ে লিখতে হবে।