৫০০ দিন পর মুক্ত রয়টার্সের দুই সাংবাদিক

ডেস্ক রিপোর্ট

মিয়ানমারে আটক ২ সাংবাদিক
রয়টার্সের ২ তরুণ প্রতিবেদক ওয়া লোন এবং কেই সো। ফাইল ছবি

অবশেষে ইয়াঙ্গুনের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন মিয়ানমারে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। তারা হলেন- ওয়া লোন (৩৩) ও কিয়াও সোয়ে ওউ (২৯)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা মঙ্গলবার তাদের কারাগারের বাইরে দেখেছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

মুক্তির পর ওয়া লোন বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কখনোই সাংবাদিকতা ছাড়ব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি খুব খুশি। পরিবার এবং সহকর্মীদের দেখতে উদগ্রীব হয়ে আছি। বার্তা কক্ষে যাওয়ার তর সইছে না।’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে ১০ জন রোহিঙ্গা পুরুষ ও কিশোরের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান চালানোর সময় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে গ্রেপ্তার হন এই দুই সাংবাদিক।

ওই বছরের আগস্টে রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা নিধনে অভিযান চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে জাতিসংঘের হিসাবে, ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এসব রোহিঙ্গাদের প্রায় সবার অভিযোগ, মিয়ানমারের বাহিনী রাখাইনে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভাষ্য, তারা ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে লড়ছে।

এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার দায়ে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন ইয়াঙ্গুনের উত্তরাঞ্চীয় জেলা জজ আদালতের বিচারক ইয়ে লুইন। পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে, সেখানেও তাদের সাজা বহাল থাকে।

শুরু থেকেই রয়টার্স দাবি করে আসছিল, ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ওউ কোনো অপরাধ করেননি। তাদের জামিন দেয়ার দাবিও করেছিল।


মুক্তির পর দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ওউ

রায়ের পর ওয়া লোন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কোনো ভয় নেই। আমি কোনো ভুল করিনি…আমি ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।’

কিয়াও সোয়ে ওউয়ের তিন বছরের মেয়ে রয়েছে। আর ওয়া লোনের স্ত্রী স্বামী কারাগারে থাকাবস্থায় প্রথম সন্তানের জন্ম দেন।

এরপরও তাদের বিরুদ্ধে সাজা দেয়ায় বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিন্দা জানায়।

গত এপ্রিলে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট দেশটির নতুন বছর (১৭ এপ্রিল) উদযাপনের ঐতিহ্য অনুযায়ী বন্দিদের সাধারণ ক্ষমতার আওতায় মুক্তির ঘোষণা দেন।

এরপর মঙ্গলবার প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এবার ৬ হাজার ৫২০ বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে প্রায় ৫০০ দিন পর মুক্তি পেলেন সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ওউ।

তবে মুক্তির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মিয়ানমার সরকারের এক মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে