স্কুল-মাদরাসা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর সংখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট

আইন ও বিচার ডেস্ক

হাইকোর্ট
বরগুনার তালতলীতে গত ৬ এপ্রিল পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা ধসে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী নিহত হয়। ছবি-সংগৃহিত

সারাদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর  সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রধান প্রকৌশলী এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলীকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে জরিপ চালিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার পর তা সংস্কার করে নিরাপদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশবান্ধব করার জন্যও বলেছেন হাইকোর্ট।

দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল-মাদরাসার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিরাপদ বা ঝুঁকিমুক্ত করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এই স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট রিটকারী আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব। অন্তর্বর্তী এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে সংশ্লিষ্টদেরকে আগামী ২১ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোজাম্মেল হক ও মো. মাজেদুল কাদের। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

হুমায়ুন কবির পল্লব জানান, জরিপ চালিয়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুল-মাদরাসার ঝুঁকিপূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে, সেগুলো নিরাপদ করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে (২১ আগস্ট) সরকারের সংশ্লিষ্টদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্কুল-মাদরাসার ভবন নিয়ে সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা গেছে, বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর অধিকাংশই ঝঁকিপূর্ণ। শুধু তাই না, সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় আদালতে তুলে ধরা হয়েছে। আদালত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দিয়েছে।

গত ৬ এপ্রিল বরগুনার তালতলীর ছোটবগি পিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিম ধসে পড়ে মানসুরা (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওই ঘটনায় আহত হয় আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এরপর দেশের আরও কয়েকটি স্কুলে দুর্ঘটনার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেসব প্রকাশিত খবর সংযুক্ত করে গত ৭ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসান তারেক পলাশ ও বেসরকারি আইনগত সহায়তাকারী ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়েই হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে