‘হে নূতন,/দেখা দিক আর-বার/জন্মের প্রথম শুভক্ষণ তোমার প্রকাশ হোক/ কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন/সূর্যের মতন।’ নিজের জন্মদিন উপলক্ষে ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে এভাবেই নতুনের ডাক দিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই দিন। আজ বুধবার, পঁচিশে বৈশাখ।
১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম কালজয়ী এ কবির। আজ কবির ১৫৮তম জন্মজয়ন্তী।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু বাঙালিরই নন, সব যুগের সব ভাষার বরণীয় কবি। কবিত্ব ও সৃষ্টির সৌন্দর্যে বিশ্বসাহিত্যে স্থায়ী আসন গড়ে নিয়েছেন তিনি। তার লেখার মধ্য দিয়ে পরিপুষ্ট হয়েছে বাংলা সাহিত্যের সব অঙ্গন।
সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার নোবেল বিজয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে এনে দেয় গৌরবের মুকুট। এশিয়ার মধ্যে সাহিত্যে নোবেল পাওয়া তিনিই প্রথম লেখক।
শুধু সাহিত্য নয়, সংগীতেও যুগান্তকারী অবদান রেখে গেছেন সংগীতস্রষ্টা এ কবি। তার গান বাঙালি মননের একেবারে গভীরে প্রোথিত। সংগীতকে তিনি আত্মদীক্ষা ও বিদ্যাশিক্ষার পরিপূরক মনে করতেন। তার গান সব সময় বাঙালির জন্য আলোকবর্তিকার কাজ করেছে। বলা হয়, বাঙালির এমন কোনো অনুভূতি নেই, যা রবীন্দ্রনাথের গান স্পর্শ করেনি।
রবীন্দ্রনাথের বাণী ও সুরের শক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী কল্যাণী বিশ্বাস বলেন, আপনার যে প্রাণের তাগিদ, আপনার যে মনের ভাষা, সবকিছুই তার গানের ভেতর প্রকাশ হয়ে আসবে। আপনার আত্মাকে স্পর্শ করবে।
আরেক শিল্পী সালমা আকবর বলেন, এই যুগে চারপাশে যে অশুভ শক্তি দেখছি, চারপাশে যে অস্থির মানসিকতা, বিধ্বংসী নানা কিছু আমরা দেখছি, তা রুখতে হলে রবীন্দ্রনাথকে আমাদের প্রয়োজন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও সংগীত জাগরণের বাণী হয়ে ধরা দিয়েছে বাংলায়। তার সৃষ্টি আজও নতুন, প্রাসঙ্গিক।