পবিত্র রমজান মাসে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই মুসলমানরা রোজা রাখছেন। নরওয়ে, আইসল্যান্ড হয়ে ফিজি সব দেশেই মুসলিমরা রমজানের ইবাদতে অংশ নিতে পারলেও চীনে মুসলিমদের এ সুযোগ কেড়ে নেয়া হয়েছে।
দেশটির কমিউনিস্ট সরকার রমজানে উইঘুরের মুসলিমদের রোজা রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। খবর ডনের।
চীনের অন্যান্য প্রদেশে আইনটি কার্যকর হলেও জিনজিয়াংপ্রদেশে এর প্রবণতা বেশি। উপবাস বা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রতি বিশেষ আগ্রহকে চরমপন্থার প্রতীক হিসেবে দেখে চীন সরকার।
রমজান উপলক্ষে জিনজিয়াংয়ের খাদ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অন্যান্য সময়ের মতো রমজানেও খাবার জায়গাগুলো খোলা থাকবে।
এ ছাড়া রমজানে রোজা, তারাবির জন্য রাত্রি জাগরণ ও অন্যান্য ধর্মীয় বিষয় পরিহার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সি উইঘুর নামে একটি ওয়েসবাইটের তথ্যমতে, পৃথিবীতে চীনই একমাত্র দেশ, যেখানে মুসলমানদের রোজা রাখতে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। বিগত ৩ বছর ধরে জিনজিয়াংয়ের উইঘুরের মুসলমানদের রোজা রাখার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
অন্য আরেকটি সূত্রে জানা যায়, রমজান মাসে সরকারি দফতর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্কুলগুলোতে মুসলিমদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়।
গত বছরের আগস্টে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটি জানিয়েছিল, চীন সরকার দেশটির ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখেছে।
চীনের জাতিগত উইঘুর মুসলমানদের বেশিরভাগ সে দেশের জিনজিয়াংপ্রদেশে বসবাস করেন। প্রদেশের প্রায় ৪৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী উইঘুর সম্প্রদায়ের।
জিনজিয়াংয়ের মুসলিম সংখ্যালঘুদের ব্যাপকহারে আটক করা হচ্ছে বলে গত কয়েক মাস ধরে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘের ওই কমিটির কাছে নানা তথ্যচিত্র তুলে ধরে দাবি করেছে, চীনা মুসলমানদের বন্দিশিবিরে আটকে রেখে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
উইঘুর মুসলমানদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস বলেছে- বন্দিদের কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই আটকে রাখা হচ্ছে এবং সেখানে তাদের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বন্দিদের ঠিকমতো খেতে দেয়া হয় না এবং ব্যাপকভাবে নির্যাতন করা হয়।