টিসিবি পণ্য: কুড়িগ্রামে ২৪ ডিলারের মধ্যে বিক্রি করছেন মাত্র ২ জন

সারাদেশ ডেস্ক

টিসিবির পণ্য বিক্রয়
টিসিবির পণ্য বিক্রয়। ফাইল ছবি
কুড়িগ্রামে সরকারের দেয়া ন্যায্যমূল্যে পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। টিসিবির দেয়া পাঁচটি পণ্য ডিলাররা বিক্রি শুরু করলেও প্রতিবারের মতো এবারো অগোছালো আর অব্যবস্থাপনায় চলছে পণ্যবিক্রি। টিসিবির সকল ডিলার পণ্য উত্তোলন না করায় এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে জেলার ২৪ জন ডিলারের মধ্যে মাত্র ২ জন ডিলার পণ্য উত্তোলন করেছেন।

সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য রমজান মাসে স্থানীয় বাজারের নিত্য প্রয়োজনী পণ্যের দাম ঠিক রাখতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ৫টি পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করেছে। কুড়িগ্রামেও শুরু হয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সেই কার্যক্রম। তেল, চিনি, খেজুর, ছোলা এবং ডাল বিক্রয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত।

universel cardiac hospital

এ পণ্যগুলো টিসিবির ট্রাক ও নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র থেকে কেনার কথা থাকলেও জেলার শুধুমাত্র দু’জন ডিলার ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করছে।

গত বছরের তুলনায় ভোক্তাদের জন্য কম দরে এ বছর প্রতি কেজি চিনি ৪৭ টাকা, মসুর ডাল ৪৪ টাকা এবং সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ১৩৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবি’র ট্রাক থেকে প্রতিদিন চিনি চারশ কেজি, মসুর ডাল তিনশ কেজি, ছোলা তিনশ কেজি, খেজুর ৩০ কেজি, তেল পাঁচশ লিটার বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ ৪ কেজি করে চিনি ও মসুর, ছোলা, ডাল, তেল ০৫ লিটার এবং খেজুর ০১ কেজি করে নিতে পারবে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনেই খেজুর আধা কেজি এবং অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ডিলার তেল বাধ্যতামূলক করায় অনেকেই পণ্য ক্রয় করতে বিমুখ হচ্ছেন।

এছাড়াও খেজুরের মান নিয়েও রয়েছে ক্রেতাদের মাঝে প্রশ্ন। প্রচার প্রচারণা না থাকায় সাধারণ মানুষ জানেনই না জেলায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

টিসিবির পণ্য কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতা জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে টিসিবির মাল বিক্রি হওয়ায় অনেক মানুষই জানে না এখানে কম দরে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এখানে বিক্রি হওয়ায় যাদের প্রয়োজন তারা না পেয়ে পাচ্ছেন সামর্থ্যবান মানুষ। ডিসি অফিসের স্টাফসহ উকিলরা এখান থেকে মাল কিনছেন।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ব্যানারে এক কেজি করে খেজুর দেয়ার কথা। তা না দিয়ে আধা কেজি করে দিচ্ছে। এছাড়াও ডিলার বাধ্যতামূলক তেল কিনতে বলায় অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন।

জনসম্মুখে পণ্য বিক্রি না করার ব্যাপারে টিসিবির ডিলার শাহিন বলেন, মানুষজন জানেন এখানে বিক্রি হয় তাই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

তেল বাধ্যতামূলক করা সম্পর্কে তিনি বলেন, বরাদ্দ বেশি থাকায় এই ব্যবস্থা। আর খেজুরের মান সঠিক রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

পৌরবাজারের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমান বাজারে ছোলা ৭০ টাকা, চিনি ৫২ টাকা,মসুর ডাল মাঝারি ৬০ টাকা, চিকন ডাল ৯৫ টাকা এবং খোলা তেল ৮০ এবং বোতলজাত তেল ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে টিসিবির ২৪ জন ডিলার রয়েছেন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২ জন, উলিুপর-নাগেশ্বরী-চিলমারীতে ০১ জন করে, রাজারহাট-ভূরুঙ্গামারীতে ৩ জন করে, ফুলবাড়িতে ৬ জন এবং রৌমারীতে ৭ জন ডিলার রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, এখন পর্যন্ত ২ জন ডিলার টিসিবি পণ্য বিক্রি করছেন। আর বাকি ডিলাররা এখনো পণ্য উত্তোলন না করায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেননি।

টিসিবির পণ্য সঠিকভাবে বিতরণ করার বিষয়ে তিনি বলেন, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করে সরকারের দেয়া টিসিবির পণ্য যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে