“তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ফেনীর পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
ফেনী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য শিগগিরই বরখাস্ত করা হবে। শাস্তির অংশ হিসেবে ২-১ দিনের মধ্যে তাকে পুলিশের একটি ইউনিটে সংযুক্ত করা হবে।
পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, বদলি নয় শিগগিরই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশের একটি ইউনিটে শাস্তিমূলক সংযুক্ত করা হবে।
ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ফেনীর পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তাকেও একটি ইউনিটে সংযুক্ত করা হবে। বিষয়টি বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে অভিযুক্ত এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফকে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহাম্মদকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
‘বদলি ও সংযুক্তের বিষয়টি ভিন্ন’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে দূরবর্তী বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে। সংযুক্তি কোনো বদলি নয়। এটি শাস্তি প্রক্রিয়ার একটি অংশ। সংযুক্তিকালে তাদের কোনো দায়িত্ব প্রদান করা হয় না।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। সে সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত।
ওই ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
পরবর্তী সময়ে সোনাগাজী থানায় অভিযোগ নিয়ে যাওয়া নুসরাতের সঙ্গে ওসি মোয়াজ্জেমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন ‘নুসরাতের পরিবারকে অসহযোগিতার অভিযোগে’ প্রত্যাহার করা হয় ওসিকে।
এরপর পুলিশ সদরদফতরের উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।