মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার পর দ্বিতীয় রাতেও শ্রীলঙ্কায় কারফিউ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের হেত্তিপোলায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা একটি মসজিদে হামলা চালানোর পর রাস্তায় সেনা টহল -ছবি: রয়টার্স

ইস্টার সানডের বোমা হামলার জেরে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গার পর দ্বিতীয় রাতেও কারফিউয়ে পার করেছে শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ শুরু হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ভোরে সব জায়গা থেকে একই সময় কারফিউ তুলে নেওয়া হলেও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে তা আরও বেশি সময় ধরে বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই প্রদেশটিতেই দাঙ্গার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল।

universel cardiac hospital

সোমবার এখানে দাঙ্গার সময় হামলাকারীরা মসজিদ ও মুসলিমদের মালিকানাধীন দোকান ভাংচুর করেছে, আগুন দিয়েছে। এ সময় এক মুসলিম ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করা হয়, হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ ডানপন্থি একটি বৌদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাসহ ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

রাজধানী কলম্বোর উত্তরের প্রদেশটির কয়েকটি শহরে দাঙ্গাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁকা গুলি করেছে।

তিন সপ্তাহ আগে খ্রিস্টানদের ইস্টার পরবের দিন কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে মুসলিম জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫৩ জন নিহত হওয়ার পর থেকে দেশটিজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

দাঙ্গার প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ সবাইকে শান্ত থাকার ও ‘ঘৃণা প্রত্যাখ্যান করার’ আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে দাঙ্গাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করতে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষগুলোকে তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘের কলম্বো দপ্তর।

সিংহলী বৌদ্ধ প্রধান শ্রীলঙ্কার দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মুসলিম। গত বছরের মার্চেও শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলে মুসলিম প্রধান এলাকাগুলোতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দিয়েছিল। ওই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছিল। 

শ্রীলঙ্কায় জাতিগত সংঘাতের ইতিহাস আছে। তাই কর্তৃপক্ষগুলো সাম্প্রতিক সহিংসতা সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করছে।

দেশটির সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে রক্তাক্ত বিদ্রোহ পরিচালনা করেছিল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে