সদ্য ঘোষিত ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক বেরিয়ে আসছে বিতর্কিতদের নানান অজানা কাহিনী। এর থেকে বাদ যায়নি সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারধণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীও। কয়েকদিন যাবৎ শোভনের সঙ্গে একটি মেয়ের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ছাত্রলীগের অনেকেই ওই মেয়েকে শোভনের বউ হিসেবে দাবি করছেন। তাদের যুক্তি, বিবাহিত শোভন কিভাবে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থাকে?
এদিকে দলের নীতি ও আদর্শ বিরোধী ১৭ জনের নাম প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী
মূলত বিবাহিত, মাদকাসক্ত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী নানা অভিযোগের ভিত্তিতে এ তালিকা করা হয়। একইসঙ্গে অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, আমি অভিযুক্তদের নাম ঘোষণা করছি। এই ১৭ জন হলেন—তানজীল ভুইয়া তানভীর (বয়স), আরেফিন সিদ্দিকি সুজন (মাদক সংশ্লিষ্টতা), সুরঞ্জন ঘোষ ( বয়স), আতিকুর রহমান খান (মাদক সংশ্লিষ্টতা), বরকত হোসেন হাওলাদার (শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ), শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ( সংগঠনের নীতি বিরোধী কর্মকাণ্ড), মাহমুদুল হাসান তুষার (মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে চেতনা ধারণের অভিযোগ), আমিনুল ইসলাম বুলবুল (মামলা রয়েছে), আহসান হাবীব (চাকরি) ,সাদিক খান (বিবাহ), তৌফিক হাসান সাগর (পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ), সোহানী হাসান তিথি (বিবাহ), রুশি চৌধুরী (বিবাহ), মুনমুন নাহার বৈশাখী (বিবাহ) ও আফরিন লাবণী (বিবাহ)।
রাব্বানী বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ১৭টি নাম পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে এই নামগুলো এসেছে। এবং সার্বিকভাবে এই নামগুলো ঘোষণা করলাম। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যাদের নাম গণমাধ্যমে বলা হলো তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রমাণিত করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয় এবং ডকুমেন্ট দিতে পারে, আমরা তা যাচাই বাচাই করে দেখবো। এর বাইরে যদি অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারে তাহলে তাদেরকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। ওই সব পদের জায়গায় যোগ্যতা অনুযায়ী বঞ্চিতদের অন্তভূর্ক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, আমার কি কোন বান্ধবী থাকতে পারে না? ওই মেয়েটা আমার বান্ধবী। তবে এর বেশি কিছু আমি বলবো না।
বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সভাপতি হওয়ার আগেও এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে একদিন এই প্রশ্নের জবাাব দিব। আজ এতটুক বলবো, উনি আমার বান্ধবী।
এসময় শোভন বলেন,আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সদ্য ঘোষিত ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কিতদের বাদ দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে পদবঞ্চিতদের কমিটিতে পদায়ন করা হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি বহাল থাকবে।
মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, ’আমি ২১ বার রক্ত প্রদান করেছি, মাদকের সাথে জড়িত থাকলে নিশ্চয় আমার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব হত না’