কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাসপাতালে পায়েশ নয় জাউ খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
জমির উদ্দিন সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘তিনি (বেগম জিয়া) আয়েশ করে পায়েস খাচ্ছেন। তিনি অসুস্থতার নামে নাটক করছেন।’ দেশের একজন বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদের অসুস্থতা নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী যে ধরনের বিদ্রুপ ও রসিকতা করেছেন তা নজিরবিহীন। এধরনের দৃষ্টান্ত সভ্য দেশ ও সমাজে একেবারেই বিরল।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, এই ক্ষতের জন্য মুখে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়েছে; যার কারণে তিনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না, কোনো রকম জাউ খেয়ে জীবন ধারণ করছেন।
‘অথচ সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন, যা শুধু অমানবিকই নয়, নিষ্ঠুর মনুষ্যত্বহীন মনেরও বহিঃপ্রকাশ।’
জমির উদ্দিন সরকার আরও বলেন, খালেদা জিয়ার নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের শুন্যতা দেখা দিয়েছে; যা তার হাড়ের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
- আরও পড়ুন>> মিলছে না টিকিট, যাত্রীদের হাহাকার
তিনি বলেন, এমনিতেই অনেক আগে থেকেই তিনি (খালেদা জিয়া) বাম কাঁধ ও হাতের ব্যথায় ভুগতেন। এখন সেই ব্যথা ডান কাঁধ ও হাতেও সম্প্রসারিত হয়ে মারাত্মক রুপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন।
‘সর্বশেষ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গেছে, ইনস্যুলিন ব্যবহারের পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ তো হচ্ছেই না, বরং তা বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে। কারাগারের দূষণযুক্ত পরিবেশে তার স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও জীবন সবই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বেগম জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বেগম জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য একজন বন্দির মানবাধিকারকে অবজ্ঞা করার শামিল এবং এ বক্তব্য কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিষ্ঠুর রসিকতায় একটি স্বৈরাচারী সরকারের ভয়াবহ রুপটিই ফুটে ওঠে বলে মন্তব্য করেন জমির উদ্দিন সরকার।