২১.
তুমি যেভাবে ছুঁয়ে আছো আমার গোপন
সে-সবই বসন্ত জানে!
শীতের রোদ্দুরে ধোঁয়া-ওঠা স্মৃতি
পাতাদের ক্রন্দনধ্বনি
বিপুল শূন্যতা শূন্যে-মহাশূন্যে
তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে উড়ে যায়
বিহ্বল শঙ্খচিল
আমি এক অবচেতনের ঘোড়ায় চেপে বসি!
২২.
ভাঁটফুলের মতো ফুটে আছো পথের প্রান্তে
সহজ সত্যের মতো তোমার ঘুঙুর বেজে ওঠে প্রিয়তমা
আমি রাখালের মাঠ থেকে তুলে নিই রাশি রাশি
সোনাঝরা রোদ
কী এক অদ্ভুত হরিণ শাবক এসে রোজ পান করে যায়
জ্যোৎস্নার জল
আমাদের মধ্যবিত্ত প্রেম যেন ডুবে যায়
গহিন গঙ্গায়, তবু আমি প্রেমে প্রেমে জীবনের পরিধি বাড়াই!
২৩.
তোমার শহর ছুঁয়ে ছুটে যায় আমার ইচ্ছের ঘোড়া
তোমার সঙ্গে যা যা হতে পারতো তার কিছুই হলো না!
অবদমনের কালো বিড়ালটি এইমাত্র ঝাঁপিয়ে পড়লো
পাহাড় থেকে, আমি একদিন বিহঙ্গ হতে চেয়েছিলাম
কিংবা রূপকথার ডানাঅলা পঙ্খিরাজ
তুমি নেই বলে আমার কিছুই হওয়া হলো না
তাই আমি এক প্রেমিকের মতো প্রতিদিন
তথাকথিত সভ্যতাকে নিকুচি করছি!
২৪.
বুনো মহিষের মতো তেড়ে আসছে বৈশাখী মেঘ
এখনই বুঝি বিচ্ছিন্ন হবে আমাদের বন্ধন!
না, কোনো ভয় নেই; এমন ব্যবস্থা করবো :
ঝলমলে আলোয় ভরে উঠবে তোমার আকাশ
রোদ্দুরে রোদ্দুরে ভেসে যাবে সকল দ্বিধা
বসন্ত এসে খুলে নেবে তোমার বসন
আমি আজলা ভরে পান করবো প্রণয়সুধা!
লেখক পরিচিতি:
মতিন রায়হান, জন্ম ২২ জুলাই ১৯৬৭ সাল। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। তার প্রকাশিত বই দশের অধিক।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর করেন। শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করা এই কবি বর্তমানে বাংলা একাডেমিতে নিয়োজিত আছেন। দুই দশকের বেশি সময় সাংবাদিকতা পেশায়ও যুক্ত ছিলেন।
অলংকরণ: নচিকেতা মাহাত, মীর রবি