‘বাংলার মানুষের মুক্তির দূত ও দিশারি হচ্ছেন শেখ হাসিনা’

ডেস্ক রিপোর্ট

আমির হোসেন আমু
আমির হোসেন আমু। ছবি - সংগৃহিত

রোববার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরামকে হারাম করে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলার মানুষের মুক্তির দূত ও মুক্তির দিশারি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। দেশি ও আন্তর্জাতিক যা কিছু অর্জন সবকিছুই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আমু বলেন, শেখ হাসিনার অর্জন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতান্ত্রিক শাসন-ব্যবস্থা ফিরিয়ে দেয়া। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, দেশ দিয়েছেন, সেই দেশের কোনো চৌহদ্দি ছিল না। সেই দেশের কোনো সীমা নেই, না ছিল স্থলসীমানা না ছিল জলসীমানা। এই দেশ যে কেউ নিয়ে যেতে পারত। সেই সীমানা নির্ধারণ করলেন শেখ হাসিনা। তিনি ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়ন করলেন। ছিটমহল সমস্যা সমাধান করলেন। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সমুদ্রসীমা ফিরে আনলেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তি করার মাধ্যমে ৩৫ বছরের রণাঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন। মাতৃভাষা বাংলার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করলেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতাই রক্তপাত ছাড়া দেশকে সামরিক শাসন মুক্ত করেছেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। আমরা জানি কোনো দেশে যদি সামরিক জান্তারা ক্ষমতা দখল করে, সেই দেশে বিনা রক্তপাতে, বিনাযুদ্ধে ক্ষমতা নেয়া যায় না। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণেই সামরিক জান্তা-স্বৈরশাসকদের হাত থেকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই দেশে আজ বারবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আসে। এই নির্বাচনকে কীভাবে কলুষিত করা হলো। আপনারা জানেন বাংলাদেশের সংবিধানে সামরিক আইন জারি করার কোনো বিধান নেই। সুতরাং সামরিক সরকার গঠন করার পর জিয়াউর রহমান, তার সরকারকে বৈধতা দেয়ার জন্যই প্রয়োজন ছিল রেটিফিকেশনের। সেই রেটিফিকশনের করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি লাগে সংসদে। দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি নেয়ার জন্য প্রথমে জিয়াউর রহমান নির্বাচনী কারচুপির শুরু করেন। এরশাদের আমলে আরও রেটিফিকশন করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা হয়। আজ যারা বড় বড় কথা বলেন এ দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া হত্যা, গণতন্ত্র হত্যার মূলহোতাই তো তারা।

আমির হোসেন আমু আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাঙালি জাতি বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হোক। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, তিনি অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে যখন তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ঠিক ওই মুহূর্তে তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এই দেশের ইতিহাসকে পেছনে নেয়া হয়। গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলাদেশকে একটি অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তানের সৃষ্টি পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবির্ভূত হয়।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দল ভাঙার রাজনীতি করতেন। রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি নয়, এটা তিনি স্টাবলিস্ট করতে চেয়েছিলেন। তিনি পরিষ্কার বলেছিলেন আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলব। এটা তিনি বাস্তবায়নের কারসাজি করেছেন। তিনি রাজনীতিবিদদের চরিত্র হরণ করা থেকে শুরু করে সবধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগকে বারবার ভেঙেছেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে আবার নতুন করে ভাঙার সুর বাজছিল। সেই মুহূর্তে দলীয় ঐক্য বজায় রাখতে শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল।’

তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন- মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক হারুন হাবীব, সঞ্চালনায় ছিলেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে