আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ নামের আন্তঃনগর ট্রেনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাসিতে ফু দিয়ে এবং সবুজ পতাকা প্রদর্শনের মাধ্যমে ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথে ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ নামের আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধনের পর ট্রেনটি পঞ্চগড় থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাভজনক না বলে বিএনপি সরকারের আমলে রেল প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারা বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে রেললাইনকে ধ্বংস করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর রেলকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করি।
- আরও পড়ুন >>‘দেশবাসীকে উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা রক্ষা করছি’
- আরও পড়ুন >> দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- আরও পড়ুন >> চন্দ্রা ও কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিরোধীদলে থাকা অবস্থায় আমরা যমুনা সেতুতে রেল সংযোগের প্রস্তাব করি। যমুনা সেতুতে রেল সংযোগকালে অনেকে অনেক রকম কথা বলেছিল। কিন্তু আমি যেটা বলেছিলাম সেটাই আজ সত্যি প্রমাণিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালে অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়ে অনেক লাইন ধ্বংস করা হয়েছে এবং ওয়াগন পুড়ে দেওয়া হয়েছে। জনগণের সম্পদ আবার নতুন করে গড়ার জন্য আমরা কাজে মনোনিবেশ করি।
তিনি বলেন, সারাদেশে রেল সংযোগ বাড়ানো হবে। সে জন্য জনবল ও দ্রুত নিতে হবে। শুধু লোক নিলেই হবে না, তাদেরকে ট্রেনিং দিয়ে যোগ্য এবং পারদর্শী করে গড়ে তুলতে হবে। ট্রেনে যারা পূর্বে কর্মচারী ছিল তাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবে।
তিনি আরও বলেন, পচনশীল দ্রব্য বিশেষ করে আম, ফলমূল এবং তরকারি যাতে ট্রেনে বহন করা যায় সেই ধরনের ট্রেনও আমাদের গড়ে তুলতে হবে। লালমনিরহাট থেকে আমরা ট্রেন যোগাযোগের ব্যবস্থা করছি। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে বগুড়া পর্যন্ত যাতে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ হয় সে পরিকল্পনাও আমরা গ্রহণ করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ট্রেন ব্যবস্থা করছি। বিদ্যুৎ চালিত ট্রেন চালু করব, সে ব্যাপারে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। বাংলাদেশে স্থাপিত ট্রেনের যে কারখানাগুলো আছে সেগুলো শক্তিশালী করা এবং ভবিষ্যতে ট্রেনের সকল পার্টস এবং ট্রেনের ওয়াগন যেন বাংলাদেশে তৈরি করতে পারি সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ট্রেন কোথাও যেন না থামে সে জন্য আন্ডারপাস বা ওভারব্রিজ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের সঙ্গে দেশের দারিদ্র মুক্ত হয়। দিন যতই যাচ্ছে ততই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। রেল ভ্রমণ অত্যন্ত আরামদায়ক। এছাড়া রেলে মালামাল পরিবহনের জন্য ভালো বাহন। রেলে খুব কম খরচে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নেওয়া যায়। কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারলে ভোক্তাকেও কম দামে পণ্য খাওয়ানো সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।