হাতে গোনা কয়েকদিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। আর এ ঈদকে ঘিরে নিরাপত্তায় বরিশালে এরইমধ্যে তৎরতা শুরু করে দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
বিশেষ করে ঈদ বাজারকে ঘিরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকাণ্ড গত কয়েক বছরের থেকে বেশ দৃশ্যমান রয়েছে। যদিও যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগকে। তারপরও পার্কিংবিহীন বাজার ব্যবস্থাপনায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সড়কের পাশে যানবাহন কোনোভাবেই থাকতে দিচ্ছে না তারা। যদিও ওইসব গাড়ির জন্য সিটি করপোরেশনের সহায়তায় নগরের মূল ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতে ঈদ উপলক্ষে পার্কিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
এছাড়াও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা, নির্বিঘ্নে ঈদ বাজারে চলাচলের জন্য ফলপট্টি থেকে চকবাজার ও কাটপট্টি রোড যান চলাচল বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপও হাতে নিয়েছে পুলিশ বাহিনী। আবার এসব কাজ মনিটরিং করাসহ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত মাঠপর্যায়ে ঘুরে দেখছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এমনকি খোদ নগর পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানও নিজে মাঠপর্যায়ে ঘুরে দেখছেন এসব।
এদিকে, নৌ-রুট ও সড়ক পথে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কমপক্ষে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ বরিশালে আসবেন। কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টুর মতে শুধু নৌ-পথেই বরিশালে ১২ লাখের মতো মানুষ আসবেন, আর গোটা দক্ষিণাঞ্চলের হিসেবটা এর কয়েকগুণ।
এ বৃহৎ সংখ্যক ঘরে ফেরা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বরিশালের প্রশাসন ইতোমধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি এরইমধ্যে মাদক কারবারি, ছিনতাইকারী চক্র, অজ্ঞান পার্টি, প্রতারকসহ দুষ্কৃতিকারীদের রুখতে কৌশলী ফন্দি এটেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যার মধ্য দিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে ঈদকে ঘিরে মাথাচারা দিয়ে ওঠা অপরাধীদের।
বরিশাল সদর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। যদিও এখনো ফোর্স পাইনি। তবে নিয়মিত নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আমরা কাজ করছি। নৌ-পথে মাদক যেন বরিশালে ঢুকতে না পারে, ছিনতাইকারী চক্র বা মলম বাহিনী যেন সক্রিয় হয়ে না উঠতে পারে সেজন্য নৌ-পুলিশের অভিযান আগে থেকেই চলমান রয়েছে।
এদিকে, ঈদ ও ঈদ বাজারকে ঘিরে মেট্রোপলিটন পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে নগরের রূপাতলী ও নথুল্লাবাদ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ দু’টি বাস টার্মিনাল ও নদী বন্দরকে ঘিরে র্যাব তাদের কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
সার্বিক বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার নাছির উদ্দিন মল্লিক বলেন, মেট্রোপলিটন পুলিশের সবগুলো ইউনিট একসঙ্গে কাজ করছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা টিম দায়িত্ব পালন করছে। শপিংমল, ব্যবসা প্রধান এলাকাসহ নগরের অলি-গলিতে আমাদের সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছে। আশা করি, বরিশালবাসী নির্বিঘ্নে ঈদ কাটাতে পারবেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
এদিকে, বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সমন্বয় সভা করেছি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এবার ঘরমুখো মানুষকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে পারবো।