‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানের টোকিওর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার ১২ দিনের ত্রিদেশীয় (জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ড) সফরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে টোকিওর হানিদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর সৌদি আরব সফর শেষে ফিনল্যান্ডে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তার সফরের প্রথমে জাপানে ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় ফিউচার এশিয়া শীর্ষক ২৫তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন।
তিনি সেখানে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
শেখ হাসিনা সেখানে তার সম্মানে বাংলাদেশি কমিউনিটির দেয়া একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন। এ ছাড়াও তিনি হলি আর্টিজানে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন এবং জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
জাপান সফর শেষ করে শেখ হাসিনা জেদ্দার উদ্দেশে টোকিও ত্যাগ করবেন। তিনি ৩ জুন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন।
সৌদি আরবে সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ১৪তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সেখানে মক্কায় ৩১ মে ‘মক্কা সামিট: টুগেদার ফর দ্য ফিউচার’ শীর্ষক ইসলামী শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন।
সৌদি আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ জুন ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী ৪ জুন ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার টোকিওর স্থানীয় সময় বেলা ১৮টা ৩০ মিনিটে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। সেখানে জাপানি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তোশিকো আবে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী জাপানি সময় ২০টা ৩০ মিনিটে হোটেল ওকুরাতে কমিউনিটি অভ্যর্থনায় যোগ দেবেন।
২৯ মে সকালে হোটেল নিউ অটনিতে প্রধানমন্ত্রী জাপানি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নেতা ও প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে প্রাতঃরাশ গোলটেবিল সভা করবেন। একই দিন বাংলাদেশে হলি আর্টিজানে ক্ষতিগ্রস্ত জাপানিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এর পর বিকালে তিনি জাপানি প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাসভায় মিলিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পৌঁছলে সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
আলোচনা শেষে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত এবং যৌথ ঘোষণা পাঠ করা হবে। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানি প্রধানমন্ত্রীর বাসায় রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
আগামী ৩০ মে প্রধানমন্ত্রী ইমপেরিয়াল হোটেলে নিক্কেই সম্মেলনে যোগদান করবেন। সেখানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মদ মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন। শেখ হাসিনা পরে একই স্থানে ভবিষ্যৎ এশিয়াবিষয়ক ২৫তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং ভাষণ দেবেন। পরে জাইকার সভাপতি শিনিচি কিতাওকা প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানস্থলে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নিক্কেই কনফারেন্স নৈশভোজে অংশ নেবেন। এখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন প্রধান বক্তা।
৩১ মে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে (জাপান সময়) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মক্কায় ওআইসির ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের ১৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য জেদ্দার উদ্দেশে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তোশিকো আবে বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন।
শেখ হাসিনা স্থানীয় সময় ৫টা ২৫ মিনিটে কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন এবং সন্ধ্যায় তিনি মক্কার সাফা প্রাসাদে ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।
৩১ মে মক্কায় ওআইসির ইসলামিক সম্মেলনের ১৪তম অধিবেশনের আয়োজন করেছে সৌদি আরব। ১ জুন বেলা সাড়ে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের প্রথম কর্ম অধিবেশনে অংশ নেবেন এবং দেড়টায় অংশ নেবেন দ্বিতীয় কর্ম অধিবেশনে।
তিনি দুপুর আড়াইটায় সমাপনী অধিবেশনে এবং পরে সাফা প্রাসাদে সুহুর ভোজে অংশ নেবেন। সন্ধ্যায় তিনি ওমরাহ পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২ জুন সকালে বিমানযোগে মদিনার উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন এবং হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর রওজা মোবারকে ফাতেহা পাঠ করবেন।
সন্ধ্যায় তিনি বিমানযোগে জেদ্দার উদ্দেশে মদিনা ত্যাগ করবেন। ৩ জুন ভোর ১টা ১০ মিনিটে তিনি ফিনল্যান্ডের হেলসিংকির উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন। স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় তিনি হেলসিংকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।