শান্তিমিশনে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

ডেস্ক রিপোর্ট

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বীরোচিত কাজ, মেধা এবং বিচক্ষণতার মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তিমিশনে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তিকামী দেশ। আমার ধারণা, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে ধরার মাধ্যমে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাবে।

আর্ন্তজাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি অন্যান্য দেশের শান্তিরক্ষীদের সাথে প্রতিযোগিতায় আইটির উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের তথ্য ও প্রযুক্তি এবং কারিগরি বিশেষজ্ঞ হওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তি মিশন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশটিকে বিশ্বব্যাপী একটি মর্যাদার অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা দেশের অর্থনীতিতে এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুমুখী কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে বিশেষ অবদান রাখছে।

রাষ্ট্রপতি ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে সারাবিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, এরপর থেকে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিমিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন শান্তিকামী ও বন্ধুপ্রতিম দেশের সংঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বজায় রাখছে।

রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘ শান্তিমিশনে সর্বাধিক সৈন্য মোতায়েনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি উল্লেখ করে বলেন, শান্তিমিশনে পুরুষ শান্তিরক্ষীদের পাশাপাশি ২১৪ জন নারী শানিরক্ষীও দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ এখন মিশনে নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, মিশনে নারীদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির অংশগ্রহণ বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের ৪০টি দেশে নয়টি মিশনে বাংলাদেশের ৬,৫৮২ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছে।

তিনি জাতিসংঘ শান্তিমিশনে কাজ করার সময়ে শহীদ শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শান্তিমিশনে দায়িত্ব পালনকালে আহত শান্তিরক্ষীদের শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রপতি সাম্প্রতিক সময়ে কঙ্গোর এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি) বেগম রৌশন আরার মৃত্যুতে গভীর শোকও দুঃখ প্রকাশ ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি জানান।

তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মালি, কংঙ্গো এবং লেবাননে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি তাদের কুশলাদি সম্পর্কে খোজ খবর নেন। এর আগে তিনি বিভিন্ন জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখেন।

রাষ্ট্রপতি পরে একটি বুক স্টল এবং জাতিসংঘ মিশনে ব্যবহৃত মডেল অস্ত্রের একটি ‘ফলেন পিচকিপার’ এর ওপর একটি স্টলসহ কয়েকটি সুন্দর স্টল পরিদর্শন করেন।

রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ৩০ বছরের অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি বিশেষ ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন। এ সময় ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মুস্তফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী, কূটনীতিকগন, তিন বাহিনীর প্রধানগন, সংসদ সদস্যবর্গ, পুলিশের আইজি, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রপতির সচিবরা উপস্থিত অনুষ্ঠানে ছিলেন।

সূত্র : বাসস

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে