অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত আগামী (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেটে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি ভূমি সংস্কারে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অংশীদারিত্ব ও বাজেট ভাবনা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
বেসরকারি সংস্থা এএলআরডি ও এইচডিআরসি আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত।
‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আদিবাসী নেতা ও সাবেক এমপি উষাতন তালুকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. শফিকুজ্জামান, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা কাজল দেবনাথ, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।
কোনো জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রেখে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মূল প্রবন্ধে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, আমাদের সংবিধানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা আছে। এমনকি শোষিতের গণতন্ত্রের কথাও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন। সেক্ষেত্রে আদিবাসীদের জন্য তুলনামূলক বেশি বরাদ্দ দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বরাদ্দ করা হয়। আবার সেটা ব্যয়ও করা হয় না।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছর সব খাত মিলিয়ে আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৯৮৯ কোটি টাকা। কিন্তু দেশের এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে বছরে সাড়ে ১২ হাজার কোটি বরাদ্দ করা প্রয়োজন। বাজেটে আদিবাসীদের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি সারাদেশে ভূমি সংস্কারে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য আগামী অর্থবছর ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমতল ও পার্বত্য এলাকার জন্য পৃথক দুটি অধিদফতরের সুপারিশ করেন তিনি।
ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, দেশে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নয়ন হলেও মানুষে মানুষে বৈষম্য বাড়ছে। সমাজের এই বৈষম্য দূর করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তা নাহলে উন্নয়ন কোনো কাজে লাগবে না।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত বাজেটে সমতলের আদিবাসীরা এক টাকাও পাবেন না। কারণ, বাজেটে অর্থই বরাদ্দ করা হয় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। এজন্য আমি সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ের দাবি জানাই।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে সাবেক এমপি উষাতন তালুকদার বলেন, সংবিধানেই প্রত্যেক মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা আছে। সুতরাং বাজেট হতে হবে সেই রকম। সংবিধানের বাইরে বাজেট হলে তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
- রোহিঙ্গাদের সরকারি খাদ্য সহায়তা দিতে হচ্ছে না
- শান্তিমিশনে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।