দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দণ্ডিত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুককে বরখাস্ত করার আদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কোর্ট কিপার শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম ফারুককে দুই ধারায় তিন বছর করে ও তার স্ত্রীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে গত ৯ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায় দেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামি গোলাম ফারুককে ৯০ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ টাকা অর্থদণ্ড এবং তার স্ত্রী সৈয়দা মমতাজকেও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আসামিরা দুজনইই পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে।
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুককে দুর্নীতি দমন কমিশনের রমনা থানায় করা বিশেষ মামলায় দ-প্রদান করা হয়। গণকর্মচারী (সাজাপ্রাপ্তিতে বরখাস্ত) অধ্যাদেশ ১৯৮৫ এর ৩ সাজাপ্রাপ্তির কারণে বরখাস্ত (১) বিদ্যমান অন্য যে কোন আইনে অথবা বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন, দলিলপত্র বা চুক্তি বা চাকরির শর্তাবলীতে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কর্মচারী তফসিলে বর্ণিত ফৌজদারী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হলে, রায় বা সাজার আদেশ ঘোষণার তারিখ হতে তাৎলক্ষনিকভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত হিসেবে গণ্য হবেন।’
- আরও পড়ুন>> মৃত্যুসঙ্গ শিশু মিশায়েলের শেষ নিঃশ্বাস
‘প্রধান বিচারপতি গত ২৮ মে এক আদেশে উক্ত সাজার তারিখ (৯ মে) থেকে আপনাকে (গোলাম ফারুক) অত্র কোর্টের চাকরি হতে বরখাস্ত (ফরংসরংংধষ ভৎড়স ংবৎারপব) করা হলো।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, দুদক গোলাম ফারুককে সম্পদের বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিলে তিনি তা দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক দেখে গোলাম ফারুক তার নিজ নামসহ দুই স্ত্রীর নামে সর্বমোট ৩ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের হিসাব দায়ের করেন। ১ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে বলে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন।
তবে তার বিরুদ্ধে সর্বমোট ৭০ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সন্ধান পায় দুদুক। তাকে সাহায্য করার অপরাধে ২০১২ সালের ১৪ জুন দুদকের উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার গোলাম ফারুকের স্ত্রী সৈয়দা মমতাজের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে তিনিই মামলাটি তদন্ত করে ২০১৩ সালে ২ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে রায় দেন আদালত।