ঈদযাত্রা শুরু, লম্বা ছুটিতে দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি

ঈদযাত্রা
ফাইল ছবি

আগামী ৩ জুন সোমবার অফিস-আদালত খোলা। ঈদযাত্রা লম্বা করার জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই ওইদিন ছুটি নিয়েছেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। পবিত্র লাইলাতুল কদরের বন্ধ রোববার।

মাঝখানে সোমবার অফিস-আদালত খোলা থাকলেও মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটি। পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। অর্থাৎ সোমবার একদিনের ছুটি নিলে ৯ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়ছে দেশ।

universel cardiac hospital

বৃহস্পতিবার বাড়ির উদ্দেশে মানুষের যাত্রা দেখে সে কথাই মনে হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই বাস-ট্রেন-লঞ্চে ঘরমুখো মানুষের ভিড় ছিল ব্যাপক। অফিস শেষে অসংখ্য মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন এবং সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বিকালের পর যাত্রীচাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যার পর ছেড়ে যাওয়া বাস, ট্রেন ও লঞ্চে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রী বেশি ছিল।

দীর্ঘযাত্রায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগেভাগেই বাড়ি রওনা হয়েছেন তারা। তবে রাজধানীর তীব্র যানজট ভোগান্তিতে ফেলে তাদের।

এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ঘরমুখো যাত্রী বহনকারী গাড়ির জ্বালানি নেয়ার সুবিধার্থে ঈদের আগে ও পরে মোট ১৩ দিন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। ঈদের আগে তিনদিন ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্ট ও ওষুধবাহী যানবাহন চলবে। ঢাকার তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

বিআরটিএ’ র পৃথক কন্ট্রোল রুম

ঈদযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে পৃথক কন্ট্রোল রুম খুলেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এসব কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা রাখা হয়েছে। এছাড়া ঈদের স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস আজ শুক্রবার থেকে যাত্রা শুরু করছে। এসব ট্রেনের ২০ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট পাবেন।

গাবতলী: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গাবতলী বাস টার্মিনালে ভিড় থাকলেও টিকিট নিয়ে ভোগান্তি ছিল না। বেশির ভাগ রুটেই টিকিট পাওয়া গেছে। গাড়িও নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়ছে। তবে ঈদে বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সক্রিয় দেখা গেল। বিআরটিএ’র ভিজিল্যান্স টিমও কাজ করছে।

মাগুরা যেতে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে আসেন গাড়িচালক মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, সাধারণ বাসের টিকিট অন্য সময় যেখানে ২৫০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। চেয়ার কোচের টিকিট ৪০০ টাকার বদলে নেয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত দারুসসালাম থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রায় ৪০ জন পুলিশ সদস্য কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করছেন।

মহাখালী: ভোর থেকেই যাত্রীরা ভিড় করছেন। দুপুর ৩টার পর থেকে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। প্রায় প্রতিটি বাসই নির্ধারিত সময়েরও এক থেকে দুই ঘণ্টা দেরিতে টার্মিনালে আসছে। বাস মালিকরা জানান, তীব্র যানজট থাকায় বাস আসছে দেরিতে। এ টার্মিনাল থেকে উত্তরবঙ্গ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও সিলেট রুটের দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়।

মানুষের চাপ বেড়েছে সদরঘাটেও

বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের অন্যতম মাধ্যম সদরঘাটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর যাত্রীচাপ ছিল লক্ষণীয়। বিআইডব্লিউটিএ’র ঢাকা নদী বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, আজ শুক্রবার যাত্রী আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির জানান, ৩০ মে থেকে লঞ্চে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ৩ জুন থেকে অতিরিক্ত লঞ্চের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

কন্ট্রোল রুম:

বিআইডব্লিউটিএ’র কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর হচ্ছে ০১৪০০-১৫০১৫০। ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ০২৯৫৮২৩০৬। ঢাকাস্থ বিআরটিএ’র সদর কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নম্বর ৫৫০৪০৭৩৭ ও মোবাইল নম্বর ০১৫৫০০৫১৬০৬।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে