তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে সদরঘাটগামী যাত্রীরা

মহানগর ডেস্ক

সদরঘাট
সদরঘাট । ছবি - সংগৃহিত

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে। কয়েক দিন ধরে লোকজন বাড়ি ফেরা শুরু করলেও আজ শুক্রবার সেই চাপ ছিল বেশি। আজ সকাল থেকেই মানুষ সদরঘাটে আসতে শুরু করে। টার্মিনালে আসতে সদরঘাটমুখী বাসেও ছিল উপচেপড়া ভিড়।

পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বাড়তি যানবাহনের চাপ দেখা যায়। পল্টন থেকে সদরঘাটগামী বাসে ছিল তীব্র যানজট। তিন কিলোমিটার রাস্তা পার হতে লেগেছে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। যানজট নিরসনে বাহাদুর শাহ পার্কের চারপাশে বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তীব্র যানজটে রায় সাহেব বাজার এলাকা থেকে হেঁটে সদরঘাটে যেতে হয় লঞ্চযাত্রীদের। রাস্তায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, এমভি টিপু, কীর্তনখোলা, রাজদূত-৭, কর্ণফুলী-৯, শাহরুখ-১, জাহিদ, এমভি ভোলা, ফারহান-৩, ধুলিয়া-১, বন্ধন-৫, যুবরাজ-২, কিং সম্রাট, ইয়াদ, খান ওয়াটার ওয়েজসহ বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ছিল যাত্রী বোঝাই। এসব লঞ্চ বিকেল পর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে টার্মিনাল ছাড়ে। তবে দুপুরের দিকে লালমোহন, ভোলা, মাদারীপুর, চাঁদপুর, আমতলী, পয়সারহাট, পটুয়াখালী, গলাচিপা, দৌলতখান, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ডামুড্যাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চ বিকেল ৪টা মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যে ছেড়ে যায়।

universel cardiac hospital

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, যাত্রীচাপ সামাল দিতে বিশেষ লঞ্চ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন রুটের ফেরি সার্ভিস নির্বিঘ্ন করতে নজর রাখা হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চ চলাচল ঠেকাতে নানা তৎপরতার কথাও বলা হচ্ছে। নদীপথে দুর্ঘটনা রোধে ঈদের পাঁচ দিন আগ থেকে ঈদের পরের পাঁচ দিন পর্যন্ত বুড়িগঙ্গায় সব ধরনের বালুবাহী জাহাজ ও ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সদরঘাট মূল টার্মিনাল ভবনে অবৈধভাবে স্থাপনকৃত ২৭ দোকান ইতিমধ্যে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নৌপথে ডাকাতি, টিকিট কালোবাজারি, বেপরোয়া লঞ্চ চালনা কিংবা নদীর মাঝপথে থামিয়ে যাত্রী তোলাসহ নানা অসঙ্গতির দিকে নজর রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এদিকে ছাদে যাত্রী বহনে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ)-এর বিধি নিষেধ থাকলেও লঞ্চ মালিক-কর্মচারীরা তা তোয়াক্কা করছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে মাঝ নদী থেকেও অনেক লঞ্চে যাত্রী ওঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বলছে, ঈদ উপলেক্ষ বাড়তি যাত্রীর কারণে মাঝ নদী থেকে এ সুযোগটা নেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে লঞ্চ মালিকদের কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ জানান, ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঈদে নির্বিঘ্ন যাতায়াতের ইতমধ্যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সদরঘাটের প্রবেশপথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যাত্রীদের চলাচলের সুবিধায় ৪ হাজার ২০০ বর্গফুট পার্কিং স্পেস বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে সদরঘাটের মূল পন্টুনে যাত্রীর চাপ কমবে। সারাদেশে ৪১টি নৌরুট আছে এবং লঞ্চের সংখ্যা ২০৬টি।

তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে সদরঘাটে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি নৌ-পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া নদীতে নিরাপত্তা বোট সব সময় টহল দেবে। দায়িত্ব পালন করবেন র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। জাহাজে কোন ধরনের অনিয়ম দেখা দিলে যাত্রীরা যাতে সহজে সরাসরি অভিযোগ করতে পারে এজন্য প্রতিটি জাহাজের অভ্যন্তরে আমাদের হেল্প লাইন মোবাইল নাম্বার দেওয়া থাকবে। জাহাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা মানার জন্য প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ সদস্য নিয়োগ করা থাকবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে