নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনতে ১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে। ইসির উন্নয়ন বাজেটের অংশ হিসেবে এই টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
ইভিএমসহ আসন্ন অর্থবছরে উন্নয়ন খাতে মোট এক হাজার ১৪১ কোটি ২৩ লাখ টাকা চেয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, রাজস্ব ও উন্নয়ন খাত মিলিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইসি মোট এক হাজার ৯২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা চেয়েছে। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ৭৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা এবং উন্নয়ন এক হাজার ১৪১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে নির্বাচনি ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১০ কোটি টাকা।
আসন্ন অর্থবছরে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ছাড়া বড় ধরনের কোনো নির্বাচন নেই। তবে, সারাবছরে স্থানীয় সরকার পরিষদের ছোটখাটো কিছু নির্বাচন বা উপ-নির্বাচন হয়ে থাকে।
এদিকে, চলতি অর্থবছরে (২০১৮-১৯) উন্নয়ন খাতে ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে তার ৫ গুণ বাড়িয়ে এক হাজার ৪৬৫ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ৭৯৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় ইভিএম কেনা প্রকল্পে। এ খাতে মূল বাজেটে কোনও বরাদ্দই ছিল না।
এছাড়া আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেনসিং একেসেস টু সার্ভিসেস প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৬৫৭ কোটি ৯৫ লাখ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আগে নেওয়া ‘ইভিএম ব্যবহারে প্রশিক্ষণসহ ইসি সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পে ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৮২ হাজার ইভিএম কেনার জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সঙ্গে ১ হাজার ৯২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চুক্তি করে। এই অর্থের পুরোপুরি সংস্থান না হওয়ার পরও ইসি সচিবালয় বিএমটিএফকে ৮২ হাজার ইভিএম কেনার জন্য কার্যাদেশও দেয়।
প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা চাহিদা থাকলেও ওই সময় ইভিএম কেনার জন্য সরকার ৭৯৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। বাকি টাকার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ করেও বরাদ্দ পায়নি ইসি। এ কারণেই ইসি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইভিএম কেনা বাবদ ১ হাজার ১২৪ কোটি চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইসি দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য ২০১৮ সালের জুলাইতে ৩ হাজার ৮২৫ কোটির প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন : ঝুঁকি মোকাবিলায় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি
- থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে বাংলাদেশের জয়
- লঙ্কানদের বিরুদ্ধে সহজ জয়ে কিউইদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু
প্রকল্পের অর্থবছর-ভিত্তিক ব্যয়ের হিসাবে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ সালে ১ হাজার ৯৯৮ কোটি, ২০১৯-২০ সালে ৮৫০ কোটি, ২০২০-২১ সালে ৮৫৪ কোটি, ২০২১-২২ সালে ৭৭ কোটি এবং ২০২২-২৩ সালে ৪৫ কোটি ব্যয় করা হবে।
প্রকল্পে তিন ধাপে ইভিএম কেনার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে১ হাজার ৯২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় ৮২ হাজার ইভিএম এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৪ হাজার করে ইভিএম কেনার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২য় ও তয় পর্যায়ে ব্যয় হবে ৭৯৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা করে।
প্রতিটি মেশিনের দাম ২ লাখ ৫ হাজার টাকা। এরসঙ্গে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির দাম ২৯ হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতিটি ইভিএমের দাম পড়ছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা।
বাজেটে বরাদ্দ চাওয়ার বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী নতুন অর্থবছরের বাজেট অর্থ মন্ত্রণালয়ে আগেই পাঠানো হয়েছে। ইভিএম কেনার জন্য চলতি অর্থবছরে আমাদের যে অতিরিক্ত একহাজার ১২৪ কোটি টাকার প্রয়োজন ছিল, তা পাওয়ার চেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে। না পেলে তা নতুন অর্থবছরে চাহিদা হিসেবে যাবে।