ঈদের ছুটি : চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটের আশঙ্কা

অর্থনীতি ডেস্ক

চট্টগ্রাম বন্দরে ভয়াবহ কনটেইনার ও জাহাজ জট
ফাইল ছবি
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কনটেইনার ডেলিভারির গতি কিছুটা কমে গেছে। সরকারি ছুটি এবং মহাসড়কে পণ্যবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী কয়েকদিনে এ গতি আরও কমে যাবে। এতে বন্দরের ইয়ার্ডগুলোতে কনটেইনারের সংখ্যা ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঈদের ছুটিতে কনটেইনারের যে চাপ সৃষ্টি হবে তা বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সব প্রস্তুতিই নেয়া হয়েছে। সরকারি ছুটি থাকলেও কনটেইনার ডেলিভারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা কাজ করবেন। তবে আমদানিকারকদের এজেন্টরা ওই সময় ডেলিভারি নিতে আগ্রহী হন না। এ কারণে কনটেইনার জমে যায়। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছুই করার থাকে না।

চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডগুলোর কনটেইনার ধারক্ষমতা ৪৯ হাজার টিইইউএস (টোয়েন্টি ফিট ইকুইভিলেন্ট ইউনিটস)। স্বাভাবিক অবস্থায় ইয়ার্ডে ৩০-৩৫ হাজার টিইইউএস কনটেইনার থাকে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হরতাল-ধর্মঘট এবং ঈদের ছুটিতে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। দেখা দেয় কনটেইনার জট। কনটেইনারের সংখ্যা ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি গেলে কিংবা অতিক্রম করলে জাহাজ থেকে কনটেইনার নামিয়ে রাখার জায়গা থাকে না। আবার কনটেইনার নাড়াচাড়া করা কিংবা ট্রেইলারে তুলতেও অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বন্দরে আমদানি কনটেইনারের সংখ্যা ধারণ ক্ষমতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই চাপ সামাল দিতে সময় লেগেছিল কয়েক সপ্তাহ।

universel cardiac hospital

এবার ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় কনটেইনার জট প্রকট হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার থেকেই কার্যত ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম ছেড়েছেন অনেকে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বন্দরেও।

বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার ৪ হাজার ৭৪০ টিইইউএস কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। শনিবার তা কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬১৬টিতে। অন্যবারের মতো এবারও মহাসড়কে ঈদের আগের ৩ দিন এবং পরের ৩ দিন মিলিয়ে ৬ দিন খাদ্য ও রফতানি পণ্য বোঝাই গাড়ি ছাড়া পণ্যবাহী অন্য গাড়ি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (সিএন্ডএফ) যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু গণমাধ্যমকে বলেন, গত মাসে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট জাহাজ ও কনটেইনার জট মাত্র কাটিয়ে উঠেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ঈদের লম্বা ছুটি এসে গেছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় এবং ঈদের আগে-পরে মহাসড়কে পণ্যবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী ৭ থেকে ৮ দিন পণ্য ডেলিভারি অনেক কমে যাবে। এতে বাড়তি কনটেইনারের একটা চাপ বন্দরের ওপর পড়বে। সেই চাপ মোকাবেলা করাটা একটু কঠিনই হবে। ছুটিতে কনটেইনারের যে জট সৃষ্টি হবে তা কাটাতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ঈদের ছুটিতেও বন্দরের সব বিভাগে কাজ হয়। শুধু ঈদের দিন ৮ ঘণ্টা পণ্য ডেলিভারি বন্ধ থাকে। আমরা সব সময়ই ডেলিভারি দিতে প্রস্তুত থাকি। কিন্তু সমস্যা হল, ছুটিতে সিএন্ডএফ এজেন্টরা পণ্য নেন না। এ কারণে বন্দরের ওপর চাপ বেড়ে যায়। তবে এবার আমরা সিএন্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের ঈদের ছুটিতে এবং এর পরে পণ্য ডেলিভারি নিতে বলেছি। যাতে কনটেইনার জট সৃষ্টি না হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে