ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে ঈদের দিনও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন পদবঞ্চিতরা। বুধবার ঈদের দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়ে আবারও সেখানে বসেছেন তারা।
গত ২৬ মে থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে টানা অবস্থান নিয়েছেন পদবঞ্চিতরা। কমিটি পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
আজ সকালে ঈদের নামাজ শেষে তাদের সহমর্মিতা জানিয়ে সেমাই খাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তারা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
- আরও পড়ুন >> পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
সম্মেলনের এক বছর পর গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলে তা পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন পদ না পাওয়া ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ারা। তাদের অভিযোগ, বিবাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন মামলার আসামিসহ নানা অভিযোগবিদ্ধ অনেককে পদ দেয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে অনেক ত্যাগী নেতাকে।
কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে মারামারিও বাঁধে কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের। এরপর কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে আশ্বাসে পিছু হটে বিক্ষুব্ধরা।
বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের মুখে গত ২৯ মে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিতর্কিত কয়েকজনকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করেন। কিন্তু এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার কর্মসূচি ঘোষণা হলে ফের অবস্থানে ফেরে বিক্ষুব্ধরা। তাদের দাবি, আগে বিতর্কিত সবাইকে সরাতে হবে, তারপরই যেন কর্মসূচি নেয়া হয়।
২৬ মে রাত থেকে রোদ-বৃষ্টির মধ্যেও তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি মানা না হলে ঈদ পেরিয়েও অবস্থান ধরে রাখার ঘোষণা রয়েছে তাদের।
কর্মসূচির বিষয়ে বিক্ষুব্ধদের অন্যতম মুখপাত্র ও বিগত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যেন কমিটির পুনর্গঠন করা হয় এবং এটা ঈদের আগেই হয়। এজন্য ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল তাদের কাছে জোর দাবিও জানিয়েছিলাম। আমাদেরও ইচ্ছা ছিল পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার। কিন্তু ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আন্তরিক ছিল না। বিতর্কিতরা ঠিকই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ পেলেন, আমরা রাজপথের কর্মীরা পারলাম না।’
বিগত কমিটির মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক উপ-সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘আমাদের মাঝে ঈদের আনন্দ স্পর্শ করতে পারেনি। কারণ যতক্ষণ না পর্যন্ত ছাত্রলীগের এই বিতর্কিত কমিটি পুনর্গঠন করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখানেই অবস্থান করব।’ প্রধানমন্ত্রী ৮ জুন দেশে আসার পর তাদের আন্দোলন আরও ‘কঠোর’ হবে বলে তিনি জানান।
অবস্থান কমসূচিতে ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক এস এম মামুন, সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন, সাবেক উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, সাবেক স্কুল ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, কবি জসিমউদদীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান প্রমুখ।