মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি এবং হাঙ্গেরির ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিজেদের দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। তারা দু’জনেই অভিবাসন এবং ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনসংখ্যাকে নিজেদের দেশের জন্য সংকট হিসেবেই দেখছেন।
ইউরোপ সফরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি। এই সফরেই বুধবার বুদাপেস্টে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি।
সু চি এবং অরবানের বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে হাঙ্গেরি সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে দু’দেশের জন্যই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অভিবাসন। এই সংকট সমাধানের বিষয়টিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন এই দুই নেতা।
তারা জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিজেদের দেশের জন্য সমস্যা হিসেবে দেখছে হাঙ্গেরি ও মিয়ানমার। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী অরবান বলেন, পারস্পরিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সব সময়ই মিয়ানমার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পাশে পেয়েছে হাঙ্গেরি।
তবে ২০১৫ সালে ব্যাপক অভিবাসনের জন্য সংকটময় পরিস্থিতি ঘোষণা করায় হাঙ্গেরির এই ডানপন্থি নেতার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকবার বিবাদ বাধে।
বিভিন্ন দেশের সরকারের মাধ্যমেই অভিবাসনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছিলেন অরবান। তার মতে এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমলাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি। হাঙ্গেরির সীমান্তকে নিরাপদ করে তোলার জন্য যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অভিবাসন বিরোধী কঠোর নীতি গ্রহণ করায় অরবান সরকারের সমালোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার কমিশন। অপরদিকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে মিয়ানমার সেনাদের পক্ষপাতিত্ব করায় বিভিন্ন দেশ বরাবরই সু চির সমালোচনা করে আসছে। তাকে দেয়া বিভিন্ন সম্মাননাও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাঁচতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।