নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার করা রিটের শুনানি হবে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটের ফাইলটি প্রেরণের আদেশ দেন।
গত ২৬ মে থেকে হাইকোর্টের কয়েকটি অবকাশকালীন বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম চলছে। আগামী ১৬ জুন থেকে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহামদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
মঙ্গলবার এ রিটের বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে আদালত খালেদার আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনারা জানেন আমাদের এটা অবকাশকালীন বেঞ্চ। এই অবকাশকালীন বেঞ্চে সময়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অনেক কিছু বিস্তারিত শুনানি করা সম্ভব হয় না। তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী সকল তথ্য উপাত্ত নিয়ে রিটটি বিস্তারিত ভাবে হাইকোর্টের কোন নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির আবেদন করেন। এরপর অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির বিষয়ে আদেশ দেন।
এ আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার এ রিটের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, তাতে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরিত আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচার হতে আমি কোন বাধা দেখছি না।
গত ২৮ মে এ রিটের বিষয়ে আংশিক শুনানির পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রিটের বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ জুন দিন ধার্য করেন। কিন্তু ১০ জুন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ রিটে সম্পূরক কিছু নথি হলফনামা আকারে দাখিল করার জন্য সময় চাইলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।
এর আগে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৬ মে হাইকোর্টে রিট করেন কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া। গত ২৭ মে এই রিটে পক্ষভুক্ত হয় দুদক।
এ রিট করার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এ রিট আবেদনে নাইকো মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এবং আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে। আর গত ১২ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তা আইন এবং সংবিধান পরিপন্থী। কারণ, সংবিধানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, কোনো বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে। আর ফৌজদারী কার্যবিধিতে (সিআরপিসি) স্পষ্টভাবে বলে দেয়া আছে যে কোথায় কোথায় আদালত স্থানান্তরিত হতে পারে। এক্ষেত্রে সিআরপিসির ৯ এর (১) ও (২) ধারায় এটা উল্লেখ নাই যে কারাগারে কোর্ট স্থাপিত হতে পারে। তাই কারাগারের একটি কক্ষে উন্মুক্তভাবে বিচার হতে পারে না বিবেচনায় ন্যায় বিচার প্রাপ্তির আসায় হাইকোর্টে রিটটি করা হয়েছে।