দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খন্দকার এনামুল বাছিরকে বরখাস্তের পর পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির পরিচালক মঞ্জুর মোরশেদ এখন থেকে এই দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ বুধবার সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।
পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এতদিন তদন্ত করেছেন দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি টেলিফোনালাপে দাবি করা হয়েছে, জনাব বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন ডিআইজি মিজানের কাছে। এই আলাপন ফাঁসের পর বাছির তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগকে বানোয়াট বলেন। তবে ডিআইজি মিজান স্বীকার করেন, তিনি অর্থ দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে এনামুল বাছিরকে বরখাস্ত করেছে দুদক। যদিও এই বরখাস্তের কারণ ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ নয়, দুদকের তথ্য ফাঁস। গণমাধ্যমকর্মীদের এমনটিই বলেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, যে কারও বিরুদ্ধেই অভিযোগ আসতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। তার মানে এই নয় যে, সে অপরাধী। কে অপরাধী সেটা প্রমাণ হবে আদালতে। বাছিরের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দুদক। অনুসন্ধানে প্রকৃত সত্য উৎঘাটিত হবে।
বাছিরকে বরখাস্ত করলেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন- এমন প্রশ্নে দুদক প্রধান বলেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলেই তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে না দুদক।
ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের ধীর গতি নিয়ে এক প্রশ্নে ইকবাল মাহমুদ বলেন, অনুসন্ধানটি বস্তুনিষ্ঠ করতে গিয়ে দেরি হচ্ছে। দুদক দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসবে।
- ‘জামায়াতকে দিয়েই বিএনপির চূড়ান্ত কবর রচনা হবে’
- ১২ দিন ধরে সাগরে ভাসছে ৬৪ বাংলাদেশি
- বাংলাদেশে নারীর গড় আয়ু বেশি
গত ২৩ মে ডিআইজি মিজানুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন এনামুল বাছির। আগের ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদন আমলে নেয়নি দুদক।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান চালায় দুদক। গত মাসে ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। অনুসন্ধান করেন দুদক কর্মকর্তা এনামুল বাছির। তার বিরুদ্ধে ডিআইজি মিজান অভিযোগ করেন, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাঁচতে এনামুল বাছিরকে দুদফায় ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন তিনি। তাদের মধ্যের অডিও রেকর্ডও প্রচারিত হয় গণমাধ্যমে।
বরখাস্তের জন্য গণমাধ্যমকে দুষলেন খন্দকার বাছির
এদিকে দুদক কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছির বরখাস্ত হওয়ার জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, গণমাধ্যম ভুল, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে আমার ক্ষতি করেছে। তারা যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন মনে করছে না। আমার যা ক্ষতি হয়েছে এর সবকিছুর জন্য গণমাধ্যম দায়ী।
বুধবার দুপুরে দুদক কার্যালয়ে প্রবেশের সময় গণমাধ্যম কর্মীরা কথা বলার চেষ্টা করেন বাছিরের সঙ্গে। এ সময় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমার ক্ষতি করে কুশল ও সালাম বিনিময় অপ্রয়োজনীয়। সাংবাদিকদের এড়াতে সাড়ে ১২টায় দুদকে প্রবেশ করলাম। তবুও তাদের কাছ থেকে ছাড় পেলাম না।