একাদশ জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বড় বড় জায়গায় হাত দিলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হঠাৎ কিছু পত্রিকা লেখালেখি শুরু করে দেয়। যে যাই লেখে, লেখুক। আমরা দেখব সঠিক কিনা। রমজান মাসে আড়ং-এর জরিমানা করায় ভোক্তা অধিকারের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে বদলি করা হয়। আমার কাছে বিষয়টি মোটেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনা দিই। আমি বলেছি, তাকে ওই দায়িত্বে আরো দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোনো দেশের আর্থিক উন্নতি ঘটলে কিছু ক্ষেত্রে টাউট বাটপার বা বিভিন্ন ধরনের সুযোগসন্ধানী লোক সৃষ্টি হয়। তাদের দমন করা শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সম্ভব না, এটা সামাজিকভাবেও করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকল সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের সমাজের বিভিন্ন মানুষ যেমন শিক্ষক, অভিভাবক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিশিষ্টজন জনপ্রতিনিধি আছেন, তাদের বলব প্রত্যেক এলাকায় একটা কমিটি করুন। এ ধরনের কোনো অন্যায় করতে দেখলে কেউ যেন প্রশ্রয় না দেয়।’
- আরও পড়ুন >> সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সম্মিলিত প্রচেষ্টা কাম্য
আজ বুধবার বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো ধরনের অপরাধের সাথে আমাদের দলের কেউ সম্পৃক্ত থাকে আমি তাদেরকেও ছাড় দিচ্ছি না, ছাড় দেব না। আর অন্য কেউ যদি করে, তারা তো ছাড় পাবেই না। শাসনটা ঘর থেকেই করতে হবে, তাই করছি। আইন-শৃঙ্খলার কেউ এ ধরনের অপরাধ করলে, জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘খুব নামিদামি জায়গায় যেকোন খারাপ কিছু হবে না বা তাদের মালিকরাও তো এই গ্যারান্টি দিতে পারবেন না। অর্থশালী সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেওয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না, এটা তো হয় না। অপরাধী সে অপরাধীই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘুষ যে গ্রহণ করবে আর ঘুষ যে দেবে, উভয়ই অপরাধী, দুইজনকেই ধরা হবে। শুধু ঘুষ নিলে তাকে ধরা হবে, তা নয়। যে দেবে তাকেও ধরা হবে। কাজেই যে দেবে ও নেবে উভয়ই অপরাধী। অপরাধের যারা উস্কানিদাতা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে চাই।’
এর আগে রওশন আরা মান্নানের একটি প্রশ্ন সঠিক হয়নি বলে বাদ দিতে বলেন সরকারি দলের সদস্য রফিকুল ইসলাম। এ প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্নটা আমি ভালমতো দেখেই গ্রহণ করি। সংস্থার কেউ কেউ দুর্নীতিবাজ বলে জনশ্রুতি আছে, কথাটা একেবারে মিথ্যা না। আর সবাই তো ধোয়া তুলসিপাতা না। কেউ বলতে পারবেন না, সবাই ১০০ ভাগ সৎ।’
‘দুর্নীতি দমনই বলেন আর খাদ্য নিরাপত্তা অধিদফতর বলেন সব ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন এমন অনেক বড় জায়গা আছে, যেখানে হাত দিলেই মনে হয় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে। বড় প্রতিষ্ঠানে যারা অপরাধ ধরতে যায়, তারাই যেন অপরাধী হয়ে যায়, আর কিছু পত্রিকা আছে সাথে সাথে লেখালেখি শুরু করে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে সঠিক তথ্য জেনে সেটা করার বিষয়ে।’