বিচারের জন্য লোকজনকে মূলভূখণ্ড চীনে পাঠানোর সুযোগ রেখে প্রস্তাবিত একটি বহিঃসমর্পণ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে হংকংয়ের হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে এসেছে।
বুধবার প্রতিবাদকারীরা হংকংয়ের সরকারি দপ্তরগুলোর আশপাশের প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান নেওয়ায় শহরের অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থলটি অচল হয়ে পড়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হাজার হাজার প্রতিবাদকারী হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের দপ্তরের কাছে পূর্ব-পশ্চিমমুখি লাং ইউও সড়কে ও এর আশপাশে জড়ো হয়েছেন। লামের দপ্তরের চারপাশে কয়েকশত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা বিক্ষোভকারীদের আর অগ্রসর না হতে বলেছে।
বিশ্বের অন্যতম এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রটিতে যান চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্য কিছু প্রতিবাদকারী রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেছে। পুলিশ তাদের সরে যেতে বললেও অনেকেই তা অগ্রাহ্য করছে। পরিস্থিতি অনেকটা ২০১৪ সালের শেষ দিকে গণতন্ত্রপন্থিদের ‘আমব্রেলা মুভমেন্টের’ মতো হয়ে উঠেছে।
সড়কগুলো অবরুদ্ধ থাকায় সরকারি কর্মচারীদের গাড়ি চালিয়ে সরকারি দপ্তরগুলোতে আসা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে চীনের কাছে হংকংয়ের হস্তান্তরের পর থেকে বিতর্কিত এই বিলটিকে কেন্দ্র করে রোববার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিক্ষোভ দেখেছে এশিয়ার এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রটি, কিন্তু তারপরও প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী লাম।
বুধবার ভোররাত থেকেই হংকংয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য আসতে শুরু করে। শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও ধর্মঘট শুরু করার প্রস্তুতি নিতে থাকে।
বুধবার হংকংয়ের ৭০ আসনের আইন পরিষদে বহিঃসমর্পণ বিলটি নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিতর্ক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ব্যাপক বিরোধিতার এই পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই বিতর্ক হবে কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
আইন পরিষদের নিয়ন্ত্রণ বেইজিংপন্থি সংখ্যাগরিষ্ঠদের হাতে।
প্রস্তাবিত বিলটি নিয়ে জনগণের উদ্বেগ প্রশমিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লাম। তিনি জানিয়েছেন, তার প্রশাসন বিলটিতে অতিরিক্ত সংশোধনী এনে তাতে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করবে।