প্রস্তাবিত বাজেটকে জনকল্যাণমুখী ও ব্যবসা সহায়ক অভিহিত করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলেছে, তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে তারা আশা করছে।
সংসদে বাজেট উপস্থাপনের দুদিন বাদে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এর ২০টি ইতিবাচক দিক তুলে ধরে এফসিসিসিআই বলেছে, তারা বাজেট নিয়ে আরও বিশ্লেষণ করছেন, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মতামতের ভিত্তিতে বিস্তারিত প্রস্তাবনা পরে অর্থমন্ত্রীকে দেবে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার বৃহস্পতিবার ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেট সংসদে প্রস্তাব করেছে। ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট আগেরটির চেয়ে ১৮ শতাংশ বড়।
প্রস্তাবিত বাজেটকে মোটা দাগে সাধুবাদ জানালেও করপোরেট করের হার না কমায় হতাশা প্রকাশ করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। বিজিএমইএ জানায়, তারা এই বাজেটে ’৭০ শতাংশ’ খুশি।
আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই বাজেট নিয়ে সন্তোষ জানিয়ে বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেট যেমন ব্যবসা সহায়ক, তেমনি জনকল্যাণমুখী।
শুধু ঘাটতি পূরণে দেশের ব্যাংক ঋণের উপর নির্ভরতা কমাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি।
প্রস্তাবিত বাজেটকে কেন ব্যবসা বান্ধব বলছেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে এফবিসিসিআইর সহ সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অতীতের বাজেটগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে এই বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও তা আলোচনার মাধ্যমে সংশোধনের সুযোগ এখনও আছে।
লিখিত বক্তব্যের বাইরে এফবিসিসিআই নেতারা বলেছেন, বড় আকারের এই বাজেট বাস্তবায়নে যেন ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার না হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেথ ফজলে ফাহিম বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, গবেষণা ও উন্নয়ন, উদ্ভাবন, আইসিটি, অবকাঠামো, আর্থ-সামাজিক, দারিদ্র্য বিমোচন, মানবসম্পদ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায় এবারের বাজেট যুগোপযোগী হয়েছে।
বাজেটের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, যুব সমাজকে উদ্যোক্তা বানাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, মুক্তিযোদ্ধা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য সুবিধা বৃদ্ধি একটি মানবিক উদ্যোগ।
১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী জনশক্তির বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর রেয়াত সুবিধা সামাজিক দায়িত্বশীলতার চর্চাকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন শেখ ফাহিম।
বাজেটে শিক্ষার মানোন্নয়নে ও আধুনিক কারিকুলাম গঠনের উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার কারিকুলামে কর-মূসক পরিশোধে নাগরিক দায়িত্ববোধ, ভোকেশনাল ট্রেনিং, ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি, কোডিংকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
রাজস্ব আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা সহজ, স্বচ্ছ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আদায় করা হবে এবং হয়রানীমুক্ত হবে বলে আশা করছে এফবিসিসিআই।
মতিঝিল ফেডারেশন ভবনে এফবিসিসিআই এর এই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।