ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে ১৯.৩৯ শতাংশ

মত ও পথ রিপোর্ট

ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে ১৯.৩৯ শতাংশ
ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে ১৯.৩৯ শতাংশ

বিগত বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে ১৯.৩৯ শতাংশ। এ ছাড়া নিহতের হার ২৪.১৭ ও আহত ৪৮.৯৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে

এবার মোট ২৩২টি সড়ক দুর্ঘটনার ৭৬টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ শতাংশ। যেখানে মোট নিহত ৩০ শতাংশ এবং মোট আহত ১০ শতাংশ।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৯ প্রকাশকালে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

ঈদযাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ২৩২টি দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ও ৮৪৯ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ২৫৬টি দুর্ঘটনায় ২৯৮ জন নিহত ও ৮৬০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিগত ঈদের চেয়ে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো। নৌ-পথে বেশ কয়েকটি নতুন লঞ্চ যুক্ত হয়েছে। রেলপথেও বেশ কয়েক জোড়া নতুন রেল ও বগি সংযুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, এবারের ঈদের লম্বা ছুটি থাকায় জনসাধারণ আগেভাগে বাড়ি পাঠানোর সুযোগ কাজে লাগানোয় ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতিসহ সার্বিক পরিকল্পনা এবং বিগত ২০১৬ সাল থেকে ঈদযাত্রায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির ধারাবাহিক সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনসমূহ গণমাধ্যম ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়ার কারণে এবারের ঈদে বিগত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ১৯.৩৯ শতাংশ, নিহত ২৪.১৭ শতাংশ ও আহত ৪৮.৯৯ শতাংশ কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষ ছাড়াও পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা প্রায় ৪৫ শতাংশ ঘটেছে। আগামী ঈদে এ দুটি ঘটনা এড়ানো সম্ভব হলে দুর্ঘটনা প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৩০ মে থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ১১ জুন পর্যন্ত বিগত ১৩ দিনে ২৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ও ৮৪৯ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন ৪০ জন চালক, ২০ শ্রমিক, ৬৮ নারী, ৩৩ শিশু, ২৪ ছাত্রছাত্রী, দু’জন চিকিৎসক, ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, তিনজন রাজনৈতিক নেতা ও ৯১২ পথচারী।

উল্লেখিত সময়ে রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে ৮, ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে দুই, ট্রেন যানবাহন সংঘর্ষে এক, ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার দুটি ঘটনায় মোট ১৩ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। একই সময় নৌ-পথে ১১টি ছোটখাট বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত, তিনজন নিখোঁজ ও ৮ জন আহত হয়েছেন।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৭.৪৩ শতাংশ বাস, ২৩.৮৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩.৫৯ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, লরি, ৮.২৫ শতাংশ কার-মাইক্রো, ৭.৬৬ শতাংশ অটোরিকশা, ৪.৪২ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৪.৭১ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক এসব দুর্ঘটনায় পড়ে।

সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৯.৭৪ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.৮২ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৯.৩৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা এবং ৬.০৩ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে