প্রায় আড়াই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে হত্যার দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন মিশরীয় এক নাগরিক।
২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্য বকেয়া ভাড়ার জন্য বাংলাদেশি ভাড়াটে জাকির খানকে (৪৪) ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় বাড়ির মালিক তাহা মেহরানকে (৫১) ১০ বছরের দণ্ড ও কারাভোগের পর আরও ৫ বছর কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে থাকতে হবে বলে জানায় ব্রঙ্কস শহরের ফৌজদারি আদালত।
বৃহস্পতিবার এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ব্রঙ্কস সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেমস ম্যাককার্টি।
ব্রঙ্কস ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ডারসেল ডি ক্লার্ক এ রায় প্রসঙ্গে বলেন, ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ব্রঙ্কসের ১০০১ লগ্যান অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ভবনের সামনে জাকির খানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় পাশেই দাঁড়ানো তার ১১ বছর বয়সি সন্তানের সামনে। ৯ মাসের ভাড়া বকেয়া থাকায় তাহা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
ডি ক্লার্ক জানান, একই বাসায় থাকতেন জাকির ও তাহা। জাকির খান গাড়ি হাঁকিয়ে বাসায় আসা-যাওয়া করতেন দেখে হিংসায় জ্বলতেন মিশরিয় তাহা। বকেয়া ভাড়া আদায়ে সহায়তা চেয়ে কমিউনিটির অনেককে জানিয়ে সাড়া না পেয়ে নিকটস্থ ৪৫ প্রেসিঙ্কটে গিয়েও কোন সহায়তা পাননি বলে আইন নিজের হাতে তোলে নেন তাহা। এসব কথা জাকির খানকে খুনের পর ওই প্রেসিঙ্কটে গিয়ে পুণরায় জানান কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাকে। গত ৩১ মে সুপ্রিম কোর্টে বিচার চলাকালে নিজের দোষ স্বীকার করার সময়েও তা উল্লেখ করেন তাহা।
মামলায় উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, জাকিরের বুক এবং ঘাড়ে বেশ কয়েকবার আঘাতের পর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আরো ২৯টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। গুরুতর অবস্থায় জাকিরকে নিকটস্থ জ্যাকবি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রবাসীরা জানান, সিলেটের সন্তান জাকির খান আবাসন ব্যবসায়ী ছিলেন। কমিউনিটির সভা-সমাবেশেও অর্থ সাহায্য দিতেন। তবু মাসের পর মাস ভাড়া পরিশোধ না করার জন্য তার খুন হওয়ার সংবাদে বিস্মিত হন অনেকে। তাকে দাফনের পর স্ত্রী-সন্তানরা গৃহহীন হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে সিটি প্রশাসনের সহায়তায় স্বল্প ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।
এদিকে মামলায় রায়ে কমিউনিটিতে স্বস্তি আসেনি। কারণ সবাই তার যাবজ্জীবন দণ্ড চেয়েছিলেন বলে জানান প্রবাসীরা।