পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘দেশের স্বার্থ রক্ষা করেই চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হবে। দেশটির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে যাতে কোনো ফাঁদে পড়তে না হয় সে জন্য বাংলাদেশ সতর্ক রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর উপলক্ষে শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে ঋণের শর্তাবলির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে পাঁচ প্রকল্পে ঋণের সুদহার ২ শতাংশ। তবে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে ঋণ-সংক্রান্ত যে সব চুক্তি হবে সেগুলোর সুদহার বেড়ে হচ্ছে ৩ শতাংশ। এর সঙ্গে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ ব্যবস্থাপনা ফি এবং শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেই চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে। আমরা যাতে চীনের ঋণের ফাঁদে না পড়ি সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছি। এর আগেও আমরা চীনের সঙ্গে ঋণ চুক্তি করেছি। কিন্তু সবগুলো ঋণ নেইনি। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে কত টাকার ঋণ চুক্তি হবে সেই পরিমাণ এখনও ঠিক হয়নি।’
- আরও পড়ুন >> রিফাত হত্যা : রিমান্ডে ৩ আসামি
তিনি বলেন, চীন সাধারণত দুই প্রকার ঋণ দেয়। এর একটি হলো- গভর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন (জিসিএল)। অন্যটি প্রিফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট (পিবিসি)। উভয় ঋণের সুদহার এর আগে ধরা ছিল ২ শতাংশ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে ঋণ চুক্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দাবি করে চীন। তবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে আলোচনা করে অবশেষে জিসিএল ঋণে সুদহার ২ শতাংশ এবং পিবিসি ঋণের সুদহার বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করবেন। চীনকে বার্তা দেবেন যে রোহিঙ্গা ইস্যু জিইয়ে থাকলে এ অঞ্চলে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হবে, ব্যাহত হবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটবে। এসব বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ সংকট সমাধানে চীনকে সক্রিয় উদ্যোগ নিতে বলবেন।’
- আরও পড়ুন >> বেসরকারি বিনিয়োগ ১৮ বছরে বেড়েছে চার গুণ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আসন্ন চীন সফরে শি জিংপিনের গত ২০১৬ সালে ঢাকা সফরের যৌথ ঘোষণা নিয়েও আলাপ হবে। ওই ঘোষণায় দুই দেশের মধ্যে যেসব চুক্তি হয়েছে তা চলমান আছে। ওইসব চুক্তির অনেক কাজ চলছে। নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, রেল লাইন স্থাপন এসব প্রকল্প চলমান রয়েছে। দেশের স্বার্থে ঢাকা ব্যালান্স ডিপ্লোমেসি চালাচ্ছে। যেমন চীনের বেল্ট এন রোড ইস্যুতে বাংলাদেশই সর্বপ্রথম যোগ দেয় এবং তা দেখে শুনে ও দেশের স্বার্থ নিশ্চিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সরকারের আমন্ত্রণে আগামী ১ থেকে ৫ জুলাই চীন সফর করবেন। এ সফরে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়নে চীনের সঙ্গে ৮টি বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এসব চুক্তি ও সমাঝোতা স্মারকের মধ্যে ঋণ চুক্তিও রয়েছে।