সর্বশেষ দুটি পিলারে স্প্যান বসার মধ্য দিয়ে পদ্মাসেতুর ওপরের অংশের এক তৃতীয়াংশ এখন দৃশ্যমান। নদীর বুকের প্রায় অর্ধেক এলাকাতেই এখন সেতুর অবকাঠামো দেখা যাচ্ছে।
মোট ৬.১৫ কিলোমিটারের এই সেতুতে বসবে মোট ৪১টি স্প্যান। শনিবার ১৪ তম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে ‘৩-সি’ নম্বর স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৫-১৬ পিলারের উপর স্থাপন করা হয়। প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ন কবির মত ও পথকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সকাল ১১টায় সেতুর অদূরে নদীতে নোঙ্গর করে রাখা স্প্যান বাহী ক্রেনটি পিলারে কাছে রওনা হয়। ১২টায় ক্রেনটি ১৫-১৬নং পিলারে সমানে পৌঁছে। ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে বহন করে নিয়ে যায় তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন।
বেলা দুইটায় অ্যাংকারিং সম্পূর্ণ হলে পিলারের উপর স্প্যান উঠানোর কাজ শুরু করা হয়। প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট নির্মাণ শ্রমিকদের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে পিলাররে উপর বসানো হয়।
প্রথমে বৃহস্পতিবার এবং পরে শুক্রবার স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়া ও ১৫-১৬ নম্বর পিলারের কাছে পলি জমে থাকার কারণে নির্ধারিত দিনে তা বসানো সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিকে স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইর্য়াড থেকে রওয়ানা দিয়ে ১৫ নম্বর খুঁটির কাছে নোঙ্গর করে রাখা হয়। পরে শুক্রবার আবার পলি জমাট সমস্যায় স্থগিত করা হয় স্প্যান বসানোর কাজ। পলির স্থান চিহ্নিত করে শুরু হওয়া ড্রেজিং শেষ হয় শনিবার সকালে ।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৪২টি খুঁটির মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯টি খুঁটির কাজ শেষ হয়েছে। ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯০টি পাইল স্থাপন হয়ে গেছে।
ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। ওপর দিয়ে চলবে গাড়ি, নিচ দিয়ে ট্রেন। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।