চতুর্থ পর্বের অভিযান : ১৯৮ স্থাপনা উচ্ছেদ, দুই একর জায়গা উদ্ধার

মহানগর প্রতিবেদক

১৯৮ স্থাপনা উচ্ছেদ, দুই একর জায়গা উদ্ধার
উচ্ছেদ অভিযান। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) নদী উদ্ধারে পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে।

আজ মঙ্গলবার শুরু হয়েছে চতুর্থ পর্বের উচ্ছেদ অভিযান। প্রথম দিনে ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অবমুক্ত হয়েছে নদীর দুই একর জায়গা।

universel cardiac hospital

সকালে বুড়িগঙ্গা নদীর কেরানীগঞ্জ অংশের খোলামোড়া ঘাট থেকে অভিযান শুরু করে বিআইডাব্লিউটিএ। চতুর্থ পর্বের প্রথম পর্যায়ের প্রথম দিনের অভিযানে নদীর দক্ষিণ তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। যা নদীর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল।

বিআইডাব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন মত ও পথকে জানান, এদিন নদী তীরে গড়ে তোলা একটি তিন তলা পাকা ভবন, ১৩টি দোতলা ভবন, ৩৭টি এক তলা পাকা ভবন উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ৮৫টি আধা পাকা স্থাপনা, ১৭টি সীমানা দেয়াল ও ৪৫টি টিনের ঘরসহ মোট ১৯৮টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, নদী তীরের ছোট-বড় দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদের মধ্যে রয়েছে মসজিদের বর্ধিত অংশের ওজুখানা, কসটেপ তৈরির কারখানা, বই বাঁধার প্রেস, আলকাতরা কারখানা, বসতবাড়ি, গোয়ালঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থানার খোলামোড়া লঞ্চ ঘাটের পূর্বদিক থেকে বাবুবাজার ব্রিজ অভিমুখে মান্দাইল গোকুলচর পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

এ সময় নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা ও সীমানা দেয়াল ভেঙে নদী উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কেরাণীগঞ্জ থানার গোকুলচর এলাকা থেকে বাবুবাজার হয়ে তেলঘাট অভিমুখে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীরে উচ্ছেদ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক।

এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি বুড়িগঙ্গা নদীর খোলামোড়া ঘাট এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ।

৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলা অভিযানটি তিন পর্বে পরিচালিত হয়। প্রতি পর্বে ১২ কার্যদিবস হিসেবে তিন পর্বে মোট ৩৬ কার্যদিবস অভিযান পরিচালনা করে বিআইডব্লিউটিএ।

তিন পর্বে চালানো অভিযানে নদী তীরভূমি দখল করে গড়ে তোলা ৫৩১টি পাকা ভবন, ৫৯৮টি আধা পাকা ভবন, ২৪৭টি সীমানা দেয়ালসহ ছোট-বড় মিলিয়ে মোট তিন হাজার ৫৭৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

এর মধ্য দিয়ে নদীর ৯১ একর জায়গা অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ।

এছাড়া জরিমানার মাধ্যমে আদায় হয়েছে পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। উচ্ছেদকৃত মালামাল নিলামে বিক্রি করে আরও পাঁচ কোটি দুই লাখ ২৬ হাজার টাকা আদায়ের কথা জানান বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক। অভিযানে বাধা দেয়া ও অবৈধভাবে নদী দখলের কারণে ২২ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলাও করে সংস্থাটি।

পরিচালিত অভিযানের পর তীরভূমি সংস্কার করে ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপনের কথা রয়েছে। এরপর নদীর নাব্য ফিরিয়ে দিতে ড্রেজিংয়ের কথা জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

নদী তীরভূমি অংশকে সংরক্ষণ এবং ঢাকাবাসীর জন্য নদীকে বিনোদনের জায়গা হিসেবে পরিচিত করতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে সংস্থাটি জানায়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে