সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল। আজ বুধবার সকালের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারায় স্বাগতিকরা।
বেলো হরিজোন্তের এস্তাদিও মিনেইরোতে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় শুরু হয় ম্যাচটি।
কোপা আমেরিকার মঞ্চে শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল আর্জেন্টিনা শিবির। কলম্বিয়ার বিপক্ষে পরাজয় দিয়ে হোঁচট খায় আলবিসেলেস্তেরা। পরের ম্যাচে প্যারাগুয়ের সঙ্গে ড্র করে আবারো ধাক্কা খায় মেসির আর্জেন্টিনা। পরে কাতারকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে তারা। এরপর শেষ আটে ভেনেজুয়েলাকে সহজেই হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়।
অন্যদিকে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দারুণ ফুটবল খেলেছে ব্রাজিল। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল, এরপর প্যারাগুয়েকে ট্রাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট পায় তিতের দল।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই দুর্দান্ত এক আক্রমণ করেন রবার্তো ফিরমিনো। তবে তার সে প্রচেষ্টা রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানি। তবে পরবর্তীতে সেটিকে অফসাইড দেখানো হয়।
নবম মিনিটের মাথায় ফের আর্জেন্টাইন রক্ষণে আক্রমণ করে স্বাগতিকরা। ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে রুখতে গিয়ে ফাউল করে বসেন নিকলাস তালিয়াফিকো। ম্যাচের দশ মিনিট হওয়ার আগেই প্রথম হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
- আরও পড়ুন >> বাংলাদেশকে বিদায় করে সেমিতে ভারত
তবে ম্যাচে প্রথম গোলের সুযোগটা তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনাই। ফাঁকায় থাকা লিওনার্দো পারেদেস ১২ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক শট নেন ব্রাজিলের গোলবারের উদ্দেশ্যে। যা পরাস্ত করে গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকেও। কিন্তু তা একটুর জন্য বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
১৯ মিনিটেই প্রথম গোল করে ফেলে ব্রাজিল। অধিনায়ক দানি আলভেস দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল সামনে বাড়ান রবার্তো ফিরমিনোকে উদ্দেশ্যে করে। তবে তিনি তা রিসিভ না করে সরাসরি পাস দেন ডি-বক্সে ফাঁকায় দাঁড়ানো গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে। সুযোগসন্ধানী জেসুস কোনো ভুল করেননি গোলের সহজতম এ সুযোগটি কাজে লাগাতে।
আর্জেন্টিনার সামনে এ গোল শোধ করার দারুণ এক সুযোগ আসে ৩০তম মিনিটে। বাম পাশ থেকে লিওনেল মেসির ফ্রি-কিকে সবার চেয়ে ওপরে লাফিয়ে মাপা হেড করেন সার্জিও আগুয়েরো। কিন্তু সেটি গিয়ে আঘাত হানে ক্রসবারে। সেবারও গোল মিস করে আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধের বাকি সময়টা দুই পক্ষের আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে শেষ হয়।
বিরতি থেকে ফিরে ৭১তম মিনিটেই ফিরমিনোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে কোপার আটবারের চ্যাম্পিয়নরা। তবে এই গোলের প্রধান সাহায্যকারী জেসুস। মাঝমাঠ থেকে ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার ডি-বক্সে ঢুকে ডান দিকে বল বাড়ান। ফাঁকায় বল পেয়ে বাকিটা অনায়াসে সারেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড ফিরমিনো।
এই গোলেই জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় স্বাগতিকদের। বাকীটা সময় আর্জেন্টিনা শুধু চেস্টাই করে গেছে, গোলের দেখা আর পায়নি।
শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে একযুগ পর কোপার ফাইনালে উঠলো তিতের শিষ্যরা। ২০০৭ সালে সবশেষ ফাইনাল খেলেছিলো ব্রাজিল।