সরকারের সাম্প্রতিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সম্পূরক আবেদন করেছে। আবেদনটি শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির তারিখ নির্ধারণের ঘোষণা দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। পেট্রোবাংলার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আশরাফ।
গত ১ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরে তা স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করে ক্যাব। ক্যাবের পক্ষ থেকে আগের রিটের সঙ্গে সম্পূরক আবেদন করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, প্রথমবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশের বিরুদ্ধে রিট করলে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আবারও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করে গত ১১ই মার্চ থেকে ১৪ই মার্চ পর্যন্ত গণশুনানি গ্রহণ বে-আইনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালে দুই দফায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট পিটিশন করে ক্যাব। সেই রিটের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন আদালত। এ অবস্থাতে চলতি মাসে আবারো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা আসে।
নতুন আবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের আইনে গ্যাসের বিতরণ ও সঞ্চালন সংক্রান্ত প্রবিধান মালায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কতগুলো সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণের কথা বলা আছে। কিন্তু এসব প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে পেট্রোবাংলা ও বিইআরসি।
গত ১ জুলাই সরকার গ্যাসের দাম বাড়ায়। এতে আবাসিকে এক চুলার দাম ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯২৫ টাকা ও দুই চুলা ৮শ থেকে হয়েছে ৯৭৫ টাকা। এ ছাড়া গৃহস্থালি কাজে মিটারভিত্তিক গ্রাহকদের জন্য দাম বেড়েছে ঘনমিটার প্রতি ১২ টাকা ৬০ পয়সা। গড়ে প্রতি ঘনমিটারে বেড়েছে ৯ টাকা ৮০ পয়সা। এছাড়া যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম প্রতি ঘনমিটার ৩৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার, শিল্প, চা-বাগান ও বাণিজ্যিক খাতেও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম চার টাকা ৪৫ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা, সার কারখানায় চার টাকা ৪৫ পয়সা এবং শিল্প কারখানা ও চা-বাগানে ১০ টাকা ৭০ পয়সা করা হয়েছে। বাণিজ্যিক খাতে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ২৩ টাকা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭ টাকা ৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।