সুন্দরবন ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না

ডেস্ক রিপোর্ট

সুন্দরবন
সুন্দরবন। ফাইল ছবি

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য নিদর্শন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কমিটির ৪৩তম সভায় ২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এর আগে, আজারবাইজানের বাকুতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনের জন্য প্রস্তাবিত এজেন্ডায় সুন্দরবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকাভুক্ত করা হয়।

universel cardiac hospital

তবে ২১ সদস্যবিশিষ্ট বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটিতে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

বাংলাদেশের পক্ষে কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার নতুন সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করে।

আলোচনাকালে পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত প্রস্তাবকারী কিউবা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন ছাড়াও আজারবাইজান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, তিউনিসিয়া, তানজানিয়া, বুরকিনাফাসো, উগান্ডা, জিম্বাবুয়ে ও পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতসহ ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র সরাসরি এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করে।

কমিটিতে সুন্দরবন সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ প্রশংসিত হয়। কমিটির সদস্যরাষ্ট্রসমূহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিবেশ রক্ষায় পদক্ষেপের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনকে স্বাগত জানান।

পরবর্তীতে অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটিয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ওই সিদ্ধান্তে এ বছর বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানাবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে হালনাগাদ তথ্যসম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বর্তমান কমিটির উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাকরণে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উৎসাহিত করবে বলে মন্তব্য করেন।

এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কমিটি বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নির্মিতব্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের প্রতি সমর্থন জানাল এবং সেই সঙ্গে তারা পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি সুন্দরবনকে বাংলাদেশের গর্ব হিসেবে উল্লেখ করে সুন্দরবন সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করবে বলে কমিটিকে আশ্বস্থ করেন।

বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম সভা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ৩০ জুন থেকে শুরু হয়ে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

এই সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম। এ প্রতিনিধিদলে অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে