রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারাল ভারত। বিশ্বকাপে শনিবার লিগ পর্বের শেষদিন লঙ্কানদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে বিরাট কোহলির দল। সেঞ্চুরি করেছেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল।
সেমিফাইনালের চার দল ঠিক হয়ে গেছে আগেই। তাই আজ শনিবার প্রথম পর্বের ম্যাচ দুইটি স্রেফ নিয়মরক্ষার। তবে এর রয়েছে বাড়তি গুরুত্ব। সেটি হলো পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল নির্ধারিত হবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচের ফলের ওপর ভিত্তি করেই। সে পথে নিজেদের কাজটা ঠিকভাবেই করে রাখল ভারত।
৯৪ বলে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ১০৩ রান করেছেন রোহিত। এটি রোহিতের হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরি। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০২ ও বাংলাদেশের বিপক্ষ ১০৪ রান করেন রোহিত।
এবারের বিশ্বকাপে রোহিতের এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে রোহিতই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি এক আসরে পাঁচটি সেঞ্চুরি করলেন। অপর ওপেনার লোকেশ রাহুল করেছেন ১১১ রান।
এ জয়ের ফলে ৯ ম্যাচ শেষে ৭ জয় ও ১ পরিত্যক্ত ম্যাচ মিলিয়ে ভারতের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে রয়েছে ৮ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট। অসিরা শেষ ম্যাচটি জিততে ব্যর্থ হলে ভারতই এক নম্বর হয়ে খেলবে সেমিফাইনালে।
২৬৫ রানের জবাবে ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল গড়েন ১৮৯ রানের বিশাল জুটি। চলতি বিশ্বকাপে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১০৩ রানে আউট হন রোহিত।
তার আগে এবারের আসরে সর্বোচ্চ রানের পাশাপাশি, এক আসরে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডটাও নিজের করে নেন হিটম্যান খ্যাত এই ব্যাটসম্যান।
রোহিত ফিরে যাওয়ার পর ধীরে সুস্থ্যে নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল। তবে তুলির শেষ আঁচড়টা দেয়া হয়নি রাহুলের। তিনি আউট হন ১১১ রান করে। বেশিক্ষণ থাকা হয়নি রিশাভ পান্তেরও, তিনি করেন ৪ রান।
- লিভার ট্রান্সপ্লান্ট : ভারতের তুলনায় কম খরচে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সাফল্য
- দোজখের ভয় দেখিয়ে ৮ মাদ্রাসাছাত্রীকে মাওলানার ধর্ষণ
- স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন : স্পিকার
তবে অধিনায়ক বিরাট কোহলি অপরাজিত ৩৪ ও হার্দিক পান্ডিয়া ৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচে ১০ ওভার বোলিং করে ৮২ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছেন লাসিথ মালিঙ্গা।
এর আগে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় রীতিমত ধুঁকছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ভারতীয় বোলারদের তোপ সামলে বিপদের মুখে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। তার এ সেঞ্চুরিতে ভর করেই লিডসে ৭ উইকেটে ২৬৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় লঙ্কানরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই স্বস্তিতে ছিল না শ্রীলঙ্কা। কুশল পেরেরার সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১৭ রান তুলতেই সাজঘরের পথ ধরেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে (১০)।
এরপর ব্যর্থতার পরিচয় দেন কুশল পেরেরা (১৮), কুশল মেন্ডিস (৩) আর আভিষ্কা ফার্নান্ডোও (২০)। ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা।
সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ। পঞ্চম উইকেটে লাহিরু থিরিমান্নেকে নিয়ে ১২৪ রানের জুটি গড়েন লঙ্কান সাবেক অধিনায়ক। ৫৩ করে থিরিমান্নে ফেরার পর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন ম্যাথিউজ।
ষষ্ঠ উইকেটে ৭৪ রানের জুটির পর ইনিংসের ৪৯তম ওভারে এসে ম্যাথিউজ নিজেই আউট হয়েছেন। তবে তার আগে দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ডান হাতি এ ব্যাটসম্যান। ১২৮ বল মোকাবিলায় তার ১১৩ রানের ইনিংসটি ছিল ১০টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কায় সাজানো।
শেষদিকে যে মারকুটে ব্যাটিংয়ের দরকার ছিল সে চাহিদা মেটাতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থিসারা পেরেরারা। পেরেরা তো ২ রান করেই ফিরেন সাজঘরে। ৩৬ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন ধনঞ্জয়া।
ভারতের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল জাসপ্রিত বুমরাহ। ১০ ওভারে মাত্র ৩৭ রান খরচা করে ৩টি উইকেট নেন ডানহাতি এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৭ রানে জয়ী ভারত।
শ্রীলঙ্কা ইনিংস: ২৬৪/৭ (৫০ ওভার)
(দিমুথ করুণারত্নে ১০, কুশল পেরেরা ১৮, অভিশকা ফার্নান্দো ২০, কুশল মেন্ডিস ৩, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ১১৩, লাহিরু থিরিমান্নে ৫৩, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৯, থিসারা পেরেরা ২, ইসুরু উদানা ১; ভুবনেশ্বর কুমার ১/৭৩, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ৩/৩৭, হার্দিক পান্ডিয়া ১/৫০, রবীন্দ্র জাদেজা ১/৪০, কুলদীপ যাদব ১/৫৮)।
ভারত ইনিংস: ২৬৫/৩ (৪৩.৩ ওভার)
(লোকেশ রাহুল ১১১, রোহিত শর্মা ১০৩, বিরাট কোহলি ৩৪, রিশাব পান্ত ৪, হার্দিক পান্ডিয়া ৭*; লাসিথ মালিঙ্গা ১/৮২, কাসুন রাজিথা ১/৪৭, ইসুরু উদানা ১/৫০, থিসারা পেরেরা ০/৩৪, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ০/৫১)।
ম্যাচ সেরা: রোহিত শর্মা (ভারত)।