অর্থনীতির উন্নতি চাইলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি মেনে নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক

দেশের উন্নতি চাইলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি মেনে নিতে হবে
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতির উন্নতি চাইলে গ্যাসের যে মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে- তা মেনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন।

চীন সফর নিয়ে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এর কারণ আমরা এনার্জি ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছি এবং গ্যাস আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে। এলএনজি গ্যাস আমদানির জন্য খরচ যথেষ্ট বেশি পড়ে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, দাম যেটুকু বাড়ানো হয়েছে, সেটুকু যদি বাড়ানো না হয় তাহলে আমাদের সামনে দুটি পথ আছে- হয় আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি না বাড়ে, সেজন্য এলএনজি আমদানি কমিয়ে দিয়ে এনার্জির ক্ষেত্র সংকুচিত করে ফেলব। অর্থনীতির উন্নতি হবে না। যদি উন্নতি চান এটাকে মেনে নিতে হবে। শুধু আমরা না গ্যাস আমদানিকারক দেশও এটা মেনে নেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬১ টাকা ১২ পয়সা করে এলএনজি আমদানি করে ৯ দশমিক ৮০ টাকায় দিচ্ছি। এখন যে দাম বাড়ানো হয়েছে এই দাম বাড়ানোর পরও আমাদের বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বা সরকার যদি ভুল করে তার খেসারত জনগণকে দিতে হয় এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৪-০৫ সালে মিয়ানমারের যে গ্যাস, সেই গ্যাসে ভারত, মিয়ানমার, জাপান, চীন বিনিয়োগ করেছিল। ভারতে ওই গ্যাস নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে পাইপ লাইনে। একটি এমইউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, কিন্তু খালেদা জিয়ার সরকার ওই পাইপ লাইনের গ্যাসটা নিতে দেয়নি। সেখানে যদি আমি থাকতাম তাহলে আমি কি করতাম- আমি পাইপ লাইনে গ্যাস নিতে দিতাম এবং আমার ভাগটাও রেখে দিতাম। আমাকে দিয়ে তারপর নিতে হবে। আমি মিয়ানমার থেকে পাইপ লাইনে গ্যাস আনতে পারতাম। সেই গ্যাস যদি এনে অর্থনীতির কাজে লাগাতে পারতাম তাহলে আমাকে এখন এলএনজি আমদানি না করলেও চলত। সেই গ্যাসটা নিতে পারিনি। পুরাটা চীন কিনে নিচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০০০ সালে আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছিল গ্যাস বিক্রি করার। আমি রাজি হয়নি। এর ফলে কি হয়েছিল? আমি ভোট বেশি পেয়েও ২০০১ সালে কিন্তু ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আর খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতায় আসলে গ্যাস বিক্রি করবে।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে যারা আন্দোলন করছেন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেখেছি অনেকে আন্দোলন করছেন। বলেছেন- ভারতে কমে যাচ্ছে। আমি বলি- ভারতে আবাসিকে গ্যাসের মূল্য ৩০-৩৭ টাকা প্রতি ঘনমিটার। আর বাংলাদেশ দিচ্ছে মাত্র ১২ দশমিক ৬০ টাকায়। শিল্পে বাংলাদেশ দিচ্ছে ১০ দশমিক ৭০ টাকা, আর ভারতে ৪০-৪২ টাকা। সিএনজি আমাদের এখানে ৪৩ টাকা, ওদের ওখানে ৪৪ টাকা। বাণিজ্যিকে আমরা এখানে দিচ্ছি ২৩ টাকায়, আর ভারতে ৫৮-৬৩ টাকা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে