ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা জারি করেছে তার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের দেয়া আদেশ দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচপারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
এর আগে অর্থ বিভাগের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের দেয়া স্থিতাবস্থার আদেশ ২ জুলাই স্থগিত করে আদেশ দেন। একইসঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ নিয়ে শুনানি হয়।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের ফলে এখন ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করা হয়। এরপর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ওই সার্কুলারের উপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজার রাখার আদেশ দেয় আদালত। সে আদেশ স্থগিত করে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার মো. মুনিরুজ্জামান।
- আরও পড়ুন, সাবেক এমপি রানার জামিন আপিল বিভাগে বহাল
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, খেলাপী ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকা আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আর অবলুপ্ত ঋণের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে বর্তমানে প্রকৃত খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুলও জারি করে। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠন এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।