জেফরি এপস্টেইন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারী এবং ধনকুবের। ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি নারী পাচারের এক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। যাদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করতেন তিনি। তাদের অনেকেরই বয়স ১৮-এর নিচে এবং সেই দলে ১৪ বছরের কিশোরীও ছিল। নিজের বিলাসবহুল বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন তিনি। এর বিনিময়ে জেফরি তাদের অর্থ দিতেন। আবার ওই যৌনদাসীদের তিনি তার জন্য নতুন নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীদের নিয়ে আসতে বলতেন। এর জন্য তারা পর্যাপ্ত অর্থও পেতেন। এভাবেই যৌন অপরাধের এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন জেফরি এপস্টেইন। যুক্তরাষ্ট্রে তার বিচার শুরু হয়েছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে এমন ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুলে ধরেন ম্যানহাটনের কেন্দ্রীয় অ্যাটর্নি জিওফরি বারম্যান। ওই দিনই যৌন অপরাধ সংঘটিত করায় নিউইয়র্কের ফেডারেল প্রসিকিউটররা জেফরির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
এর আগে, শনিবার রাতে প্যারিস থেকে ফেরার পর বিমানবন্দরেই ৬৬ বছর বয়সী জেফরিকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৪৫ বছরের জেল হতে পারে। এক দশক আগেও জেফরির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। তখন বিচারিক দুর্বলতার কারণে মাত্র ১৩ মাস জেলে থাকার পর বেরিয়ে যান তিনি। সে সময় তাকে যৌন অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এফবিআই। একই সঙ্গে তার যৌন অপরাধের ভুক্তভোগী কয়েকজন নারীকে ক্ষতিপূরণও দেন তিনি।
তবে সম্প্রতি মিয়ামি হেরাল্ড নামের একটি পত্রিকা জেফরির সে সময়কার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপে। তাতে দেখানো হয় কীভাবে তৎকালীন অ্যাটর্নি অলেক্সেন্ডার অ্যাকোস্তা ওই মামলা পরিচালনা করেছিলেন। অ্যাকোস্তা এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শ্রমমন্ত্রী। মূলত ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি ছাপার পরই জেফরির বিরুদ্ধে ফের যৌন অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জেফরি যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী ধনকুবের, যার সঙ্গে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন থেকে শুরু করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি ব্রিটেনের প্রিন্স এন্ড্রুর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তার। ২০১৫ সালেও জেফরি একবার যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তখন ফ্লোরিডায় করা মামলায় এক নারী অভিযোগ করেছিলেন, অপ্রাপ্ত বয়সে জেফরি তাকে অনেক পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনে বাধ্য করেন।