ভারতে রপ্তানি আয় ১০০ কোটি ডলার ছাড়াল

অর্থনীতি ডেস্ক

ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। প্রথমবারের মতো রপ্তানি আয় ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এমন সাফল্য ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক থাকা ৬৭টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে অ্যাঙ্গোলা ও মোজাম্বিক ছাড়া আর কারও নেই।

সদ্য বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতে ১২৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এর আগের অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ৮৭ কোটি ডলার। তার মানে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় ৪২ দশমিক ৯২ শতাংশের মতো বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

universel cardiac hospital

ভারতে পণ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের সাফল্যের পেছনে তৈরি পোশাক বড় ভূমিকা রেখেছে। মোট রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশই তৈরি পোশাক। বিদায়ী অর্থবছরে ৪৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা।

রপ্তানির এই পরিমাণ এর আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ৭৯ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ২৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। রপ্তানি আয় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পোশাক ছাড়া সয়াবিন তেল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানি, প্লাস্টিক পণ্য, ইস্পাত ও চামড়াজাত পণ্য সহায়তা করেছে।

ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার কারণে ভারতের উদ্যোক্তারা, বিশেষ করে পোশাকশিল্পের মালিকেরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তাঁদের একাংশ বাংলাদেশকে দেওয়া শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

১২৪ কোটি ডলারের বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভারতের শিল্পোদ্যোক্তারা। ২০১১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অস্ত্র ও মাদক বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। যদিও সেটা তেমন কাজে লাগাতে পারছিল না বাংলাদেশ। তবে দুই অর্থবছর ধরে অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে।

পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্ন শহরে বিদেশি অনেক ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্র হয়েছে। যেহেতু বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা কাজ করছেন, তাই সহজেই ক্রয়াদেশ আসতে থাকে। তা ছাড়া ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকের মজুরি সস্তা। পণ্যের বৈচিত্র্য তুলনামূলক বেশি।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে পোশাক রপ্তানি আরও বাড়াতে হলে তাদের দেশের কাপড় ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিদেশি ব্র্যান্ড ছাড়াও দেশটিতে অনেক লোকাল বা স্থানীয় ব্র্যান্ড গড়ে উঠেছে। সেসব ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করা গেলে আমাদের ক্ষুদ্র-মাঝারি কারখানাগুলো ক্রয়াদেশ পাবে। তা ছাড়া গবেষণা ও পণ্য নকশায় জোর দিতে হবে।’

নতুন বাজার হিসেবে ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের বড় বাজার হতে পারে বলে মন্তব্য করেন রুবানা হক।

তিনি বলেন, আসিয়ানে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বাজার রয়েছে। ২০৩০ সালে আসিয়ান হবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। বাজারটি ধরতে উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ দরকার।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে