বিশ্বকাপ : আইসিসির সেরা একাদশে সাকিব

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আইসিসির সেরা একাদশে সাকিব

বিশ্বকাপের এবারের আসরে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার খেতাব অর্জন করল ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড। আগের তিনবার ফাইনালে উঠে যা করতে পারেনি, তা গতকাল (রোববার) করে দেখিয়েছে তারা।

প্রতিবারের মতো এবারো বিশ্বকাপে হয়েছে অসংখ্য রেকর্ডের ছড়াছড়ি। জ্বলে উঠেছেন অনেক পারফরমার। আবার ফ্লপ হয়েছেন বিখ্যাত সব নামিদামী খেলোয়াড়রাও।

universel cardiac hospital

সেই জ্বলে ওঠা খেলোয়াড়দের মধ্য থেকেই বাছাই করা হয়েছে এবারের বিশ্বকাপের সেরা একাদশ। বাছাই করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। মত ও পথের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো সেই একাদশ।

রোহিত শর্মা (ওপেনার, ভারত)

বিশ্বকাপটা এবার স্বপ্নের মতোই কাটিয়েছেন ভারতের ওপেনিং ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা। রেকর্ড পাঁচ সেঞ্চুরিতে ৯ ম্যাচে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান করেছেন তিনি। তার ওপর ভর করেই আসরের সেমিফাইনালে পৌঁছায় ভারত।

জেসন রয় (ওপেনার, ইংল্যান্ড)

টুর্নামেন্টের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জেসন রয়; কিন্তু মাঝপথে ইনজুরিতে পড়ায় দুই ম্যাচের জন্য ছিটকের যান তিনি। আর তাতে বিপদে পড়ে ইংল্যান্ড। সেই দুই ম্যাচে হেরে তাদের সেমিফাইনাল অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আবারো ফিরে এসে দলকে সেমিফাইনালের তোলার দায়িত্বটা ভালোভাবেই নিয়ে নেন রয়। ৮ ম্যাচে ইংলিশদের হয়ে ৪৪৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।

কেন উইলিয়ামস (অধিনায়ক, নিউজিল্যান্ড)

একা একটা দলকে কিভাবে ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয় সেটা যেন এবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তার ঠান্ডা মাথার বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বে এবং ব্যাটিং দৃঢ়তায় ফাইনালে উঠতে সক্ষম হয় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ভাগ্যের কারণে শেষপর্যন্ত শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয় দলটি। তবে ১০ ম্যাচে ৫৭৮ রান নিয়ে ঠিকই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা ভাগিয়ে নেন উইলিয়ামসন।

জো রুট (মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, ইংল্যান্ড)

অভিষেকের পর থেকেই ইংল্যান্ডের হয়ে অসাধারণ পারফর্ম করছে জো রুট। পারফরেন্সের এই ধারাবাহিকতা অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেও বজায় রাখেন এই ব্যাটসম্যান। দলের হয়ে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৫৫৬ রান তার ব্যাট থেকেই আসে।

সাকিব আল হাসান (অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ)

একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির সেরা একাদশে সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এই টুর্নামেন্টে নিঃসন্দেহে ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে ছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে ৮ ম্যাচে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও নিয়েছেন ১১টি উইকেট। আইসিসি তাকে সেরা একাদশে রেখেছে অলরাউন্ডার প্লাস একমাত্র স্পিনার হিসেবেও।

বেন স্টোকস (অলরাউন্ডার, ইংল্যান্ড)

ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন করার মূল কারিগর বেন স্টোকস। পুরো টুর্নামেন্টের ধারাবাহিকতা আসরের ফাইনালেও বজায় রাখেন এই অলরাউন্ডার। তার করা ৮৪ রানের ওপর ভর করেই প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার খেতাব অর্জন করে ইংল্যান্ড। দলের হয়ে ১১ ম্যাচে ৪৬৫ রান ও ৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।

অ্যালেক্স ক্যারে (অস্ট্রেলিয়া, উইকেটরক্ষক)

অ্যালেক্স ক্যারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলে ঢোকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ছিল। কেননা, উইকেট পেছনের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করলেও ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপে এসে বদলে যান তিনি। ৯ ম্যাচে ৩৭৫ রান করে সবাইকে ভুল প্রমাণ করেন অস্ট্রেলিয়ার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

মিচেল স্টার্ক (পেসার, অস্ট্রেলিয়া)

গতবারের মতো এবারো টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছেন স্টার্ক। তবে এবার শেষ করলেন রেকর্ড গড়ে। ভেঙেছেন এক আসরে তারই স্বদেশি কিংবদন্তী বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রার নেয়া ২৬ উইকেটের কীর্তি। ওই জায়গায় চলতি বিশ্বকাপে ১০ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন এই পেসার।

জোফরা আর্চার (পেসার, ইংল্যান্ড)

অনেক জল্পনা-কল্পনার পর জোফরা আর্চারকে বিশ্বকাপ দলে নেয় ইংল্যান্ড। মাঠে নেমেই আর্চার দেখিয়ে দেন তাকে দলে না নিলে কি ভুলটাই না করত থ্রি লায়ন্সরা। এমনকি বিশ্বকাপটাও হাতছাড়া হয়ে যেতে পারত তাদের। কেননা ১১টি ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২০টি উইকেট নিয়েছেন আর্চার।

লকি ফার্গুসন (পেসার, নিউজিল্যান্ড)

বিশ্বকাপ আসর শুরুর আগে থেকেই বলে বাড়তি গতির কারণে আলোচনা ছিলেন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন। বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে প্রথমবার এসেই নামের প্রতি সেই সুবিচারটা করে দেখিয়েছেন এই কিউই পেসার। ৯ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে দলকে ফাইনালে তুলতে অপরিসীম ভূমিকা রাখেন তিনি।

জাসপ্রিত বুমরাহ (পেসার, ভারত)

বর্তমান বিশ্বের নাম্বার ওয়ান বোলার ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসে ৮ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে দলকে সেমিফাইনালে তোলার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারত ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় আর কোনো ম্যাচ না খেলেই বিদায় নিতে হয় এই বোলারকে। তবে ঠিকই আইসিসির সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

দ্বাদশ খেলোয়াড় : ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)

গত বিশ্বকাপের মতো এবারো দুর্দান্ত ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। কিউইদের বোলিং ইউনিটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি; কিন্তু ফাইনালে ম্যাচের শেষ ওভারে দলকে শিরোপা জেতাতে ব্যর্থ হন এই বোলার। তবুও টুর্নামেন্ট অসাধারণ খেলে ১০ ম্যাচে ১৭ উইকেট নেন কিউই পেসার বোল্ট।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে