সুপার ওভারও টাই, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সুপার ওভারও টাই, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড
ছবি : ইন্টারনেট

মূল ম্যাচের নির্ধারিত ১০০ ওভারের খেলায় পিছিয়ে ছিল না কোনো দলই। আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ডের করা ২৪১ রানের জবাবে নিজেদের ৫০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহও দাঁড়ায় ঠিক ২৪১ রানই। ফলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টাই হয় ফাইনাল ম্যাচ এবং শিরোপা নির্ধারণের জন্য ম্যাচ নেয়া হয় সুপার ওভারে।

যেখানে মুনসিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। বাঁহাতি কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্টের ওভারে বাটলার ও স্টোকস মিলে করেছিলেন ১৫ রান। পরে ইংল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে আসেন জোফরা আর্চার। সে ওভারের ৫ বলেই ১৩ রান করে ফেলেন নিশাম। শেষ বলে ১ রান নিতে সক্ষম হন গাপটিল।

ফলে টাই হয় সুপার ওভারও। কিন্তু মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। ম্যাচে আগে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় মোট বাউন্ডারি পায় ১৬টি। অন্যদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২২টি চারের সঙ্গে ২টি ছয় মারে ইংল্যান্ড। যে কারণে সুপার ওভারের নিয়মানুযায়ী চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।

নিয়মানুযায়ী মূল ম্যাচে পরে ব্যাটিং করা ইংল্যান্ডকে সুপার ওভারে দেয়া হয় আগে ৬টি বল খেলতে। স্বাগতিকদের পক্ষে আসেন ম্যাচের দুই সফল ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস এবং জস বাটলার। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে তুলে নেন ট্রেন্ট বোল্ট।

সুপার ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইক নেন স্টোকস। বোল্টের করা প্রথম বলে তিনি নেন ৩ রান। দ্বিতীয় বলে বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ১ রান। তৃতীয় ডেলিভারিতে স্টোকস ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ৪ মারলে রান গিয়ে পৌঁছায় আটে।

চতুর্থ বলে অফসাইডের লো ফুলটস বলে ১ রান নেন স্টোকস। স্ট্রাইক পেয়ে পঞ্চম বলে ২ রান নেন বাটলার এবং শেষ বলে লো ফুলটস ডেলিভারিতে ৪ মেরে দলীয় সংগ্রহকে ১৫তে নিয়ে যান এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

ফলে নিউজিল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য ৬ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ রানের। যা তাড়া করতে কিউইদের পক্ষে নামেন মার্টিন গাপটিল ও জিমি নিশাম। অন্যদিকে ইংলিশদের পক্ষে বল হাতে তুলে নেন গতি তারকা জোফরা আর্চার। যিনি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১ ওভারে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন ১৫ রান। এবার ইংল্যান্ডের হয়ে শিরোপা জিততে তাকে ডিফেন্ড করতে হতো ১৬ রান।

ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইক নেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। অতিরিক্ত চাপে শুরুর বলটি নিশামের ব্যাট থেকে অনেক দূরে করে বসেন আর্চার। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা দুই হাত প্রসারিত করে জানিয়ে দেন এট ই ওয়াইড বল। ফলে ৬ বলে ১৫ রানে নেমে আসে সমীকরণ।

পরের বলটিই ইয়র্কার করেন আর্চার। তবু সে বল থেকে ২ রান নিতে সক্ষম হন নিশাম। ৫ বলে বাকি থাকে ১৩ রান। দ্বিতীয় বলেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন নিশাম। ২ বলে ৯ রান করে ফেলায় শেষের ৪ বলে কিউইদের বাকি থাকে ৭ রান।

ছন্দে থাকা নিশাম তৃতীয় বলে নেন আরও ২ রান। সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ৫ রানে। চাপের মুখে চতুর্থ বলটি করেন স্লোয়ার। যে বলে আবার ২ রান নেন নিশাম। কিন্তু শেষ ২ বল থেকে নিশাম ও গাপটিল মিলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি। ফলে সুপার ওভারও টাই হয় এবং শিরোপা উঠে যায় ইংল্যান্ডের ট্রফি কেসে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল: সুপার ওভারে জয়ী ইংল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ড ইনিংস: ২৪১/৮ (৫০ ওভার)

(মার্টিন গাপটিল ১৯, হেনরি নিকোলস ৫৫, কেন উইলিয়ামসন ৩০, রস টেইলর ১৫, টম লাথাম ৪৭, জেমস নিশাম ১৯, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১৬, মিচেল স্যান্টনার ৫, ম্যাট হেনরি ২, ট্রেন্ট বোল্ট ১; ক্রিস ওয়েকস ৩/৩৭, জফরা আর্চার ১/৪২, লিয়াম প্লানকেট ৩/৪২, মার্ক উড ১/৪৯, আদিল রশীদ ০/৩৯, বেন স্টোকস ০/২০)।

ইংল্যান্ড ইনিংস: ২৪১ (৫০ ওভার)

(জ্যাসন রয় ১৭, জনি বেয়ারস্টো ৩৬, জো রুট ৭, ইয়ন মরগ্যান ৯, বেন স্টোকস ৮৪*, জস বাটলার ৫৯, ক্রিস ওয়েকস ২, লিয়াম প্লানকেট ১০, জফরা আর্চার ০, আদিল রশীদ ০, মার্ক উড ০; ট্রেন্ট বোল্ট ০/৬৭, ম্যাট হেনরি ১/২৫, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ১/৪০, লকি ফার্গুসন ৩/৫০, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টনার ০/১১)।

সুপার ওভার

ইংল্যান্ড: ১৫/০ (১ ওভার)

নিউজিল্যান্ড: ১৫/১ (১ ওভার)

ম্যাচ সেরা: বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)।

ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে