খুলনা মহানগরীর বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকায় এক্সিম ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষণ এবং বৃদ্ধ বাবা ইলিয়াছ চৌধুরীসহ তাকে হত্যা ও বাড়ির মালামাল লুটের দু’টি মামলায় পাঁচ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন-সাইফুল ইসলাম পিটিল, তার ভাই শরিফুল ইসলাম, মো. লিটন, আজিজুর রহমান পলাশ ও আবু সাঈদ।
রায় ঘোষণার পর চার আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামি শরিফুল ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা ২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকার ৩ নম্বর সড়কের ইলিয়াছ চৌধুরীর ‘ঢাকাইয়া হাউজ’ নামের বাড়িতে যায়। ওই বাড়িতে গিয়ে তারা বৃদ্ধ ইলিয়াছ চৌধুরীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর পাঁচজন পারভীনকে গণধর্ষণ করে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাশ গুম করার জন্য সেফটি ট্যাংকে ফেলে দেয়।
তারা ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ বেশ কিছু মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। পারভীন তাকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটায়।
এ ঘটনায় নিহত ইলিয়াছ চৌধুরীর ছেলে রেজাউল আলম চৌধুরী বিপ্লব বাদী হয়ে ২০ সেপ্টেম্বর লবণচরা থানায় হত্যা এবং ২২ সেপ্টেম্বর ধর্ষণ মামলা করেন।
২১ সেপ্টেম্বর আসামি মো. লিটন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া আরেক আসামি সাঈদও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লবণচরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী বাবুল ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ ধর্ষণ মামলায় এবং ৯ মে হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। হত্যা মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন ও ধর্ষণ মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী রেজাউল আলম চৌধুরী বিপ্লব জানান, এই রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। দ্রুত এই রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ। এছাড়া তাকে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট কাজী সাব্বির আহমেদ।