নেত্রকোনা জেলা শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যাগে শিশুর কাটা মাথা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় এক যুবকের (২৮)।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টার জেলা শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্তপুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটির নাম সজীব মিয়া (৮)। সে শহরের পূর্ব কাটলী এলাকার রিকশাচালক রইছ উদ্দিনের ছেল।
গণপিটুনিতে নিহত যুবকের নাম রবিন। তার পিতার নাম এখলাসউদ্দিন। সে-ও পেশায় একজন রিকশাচালক এবং মাদকসেবী বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে এক যুবক হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে বারহাট্টা রোডের পাশে সুইপার কলোনিতে মদ খেতে যায়। এ সময় ব্যাগে থেকে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়তে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে তারা ব্যাগটি দেখতে চাইলে ওই যুবক দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করে। তখন স্থানীয়রা তাকে আটক করে ব্যাগ তল্লাশি করে তার মধ্যে এক শিশুর ছিন্ন মাথা দেখতে পায়। পরে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে তাকে এলোপাতারি গণপিটুনি দেয়। গণপিটুনির একপর্যায়ে সে মারা যায়।
- আরও পড়ুন >> নৌ-পথে বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান ট্রেডের নবযাত্রার সূচনা
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের লাশ এবং শিশুর ছিন্ন মাথাটি উদ্ধার করে। পরে সজীবের স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে ছিন্ন মাথাটি সজীবের বলে শনাক্ত করে।
সজীবের স্বজনরা জানায়, সকাল সোয়া ১১টার দিকে সে তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ টাকা নিয়ে স্থানীয় একটি দোকান থেকে খাওয়ার জিনিস কিনতে যায়। এর পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে বিকেল ৩টার দিকে কাটলী এলাকার একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের তিনতলার ছাদে সজীবের দেহের বাকি অংশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহজাহান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ঘাতক যুবক ও নিহত শিশুটির পরিবার পাশাপাশি থাকে এবং একে অন্যের পরিচিত। সে মাদকাসক্ত এবং নানা ধরনের মাদক সেবন করে। এই দুই পরিবারের মধ্যে কোনো আন্তকোন্দল আছে কি-না এবং এই খুনের মোটিভ কী তা অনুসন্ধানে আমরা কাজ করছি।