জনগণের কণ্ঠকে রোধ করার জন্য সেদিন শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সেদিন শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছিল। তাই ১৬ জুলাই শেখ হাসিনার বন্দি দিবস নয়, এটি হচ্ছে গণতন্ত্রের বন্দি দিবস বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার সেগুনবাগিচায় ‘স্বাধীনতা হল’- এ বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন চালিয়েছিল বিএনপি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিল। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছিল। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম— যারা পরপর দুর্নীতিতে পাচঁবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, যে দলের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সম্মান বিশ্বসভায় ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল, যারা দেশকে সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল, হাওয়া ভবন স্থাপন করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করেছিল,বাংলাদেশকে যারা জঙ্গিদের অভয়ারণ্য তৈরি করেছিল— তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং এগুলোর বিরুদ্ধে যিনি প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সেদিন গ্রেফতার করা হয়। কারণ, শেখ হাসিনা হচ্ছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও চেতনার অগ্নিবীণা। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর ছিলেন। সুতরাং, জনগণের কণ্ঠ রোধ করার জন্য সেদিন শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সেদিন ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছিল। তাই ১৬ জুলাই শেখ হাসিনার বন্দি দিবস নয়, এটি হচ্ছে গণতন্ত্রের বন্দি দিবস।
বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ যে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারবে, সেটা কি কেউ ভেবেছিল? খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও পদ্মা সেতু করতে পারবে না। অথচ পদ্মা সেতু আজকে দৃশ্যমান। আর কদিন পরেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলবে। খালেদা জিয়া এও বলেছেন, পদ্মা সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে। সেতু তো জোড়াতালি দিয়েই বানানো হয়। একেকটি স্প্যান আলাদা আলাদা করে বসাতে হয়। এটি তো বাড়ির ছাদ নয় যে, একবারে ঢালাই করে দেবে। এই জ্ঞান যাদের নাই, তারা আবার দেশ চালাবার কথা বলে।
‘আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই, আপনারা অন্তত এই সমাবেশে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেন নাই’— মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের বিপরীতে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা একটি সমাবেশ মোটামুটিভাবে কোলাহলমুক্ত করেছেন। জানি না ভবিষ্যতে সমাবেশগুলো আপনারা কোলাহলমুক্ত রাখতে পারবেন কিনা। আমরা আশা করবো সেটিও রাখতে পারবেন।
‘সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের কিছু মানুষের পকেট ভারি হচ্ছে’, মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে উনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন দেশের উন্নয়ন না করে তাদের পকেট ভারি করেছেন। সেজন্যই তারা এসব কথা বলেন। তখন দেশ দুর্নীতিতে পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম খান এবং সভাপতি মো. জিন্নাত আলী জিন্নাহ প্রমুখ।