বরগুনা সদরে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার এবং তার উপযুক্ত চিকিৎসার আবেদন করা হয়। তবে দুই আবেদনই নামঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ সোমবার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী আবেদন দু’টি নামঞ্জুর করেন।
মিন্নির আইনজীবী ও জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া মিন্নির জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় মিন্নি অসুস্থ বলেও দাবি করে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়ার আবেদন করা হয়।
রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বরগুনা শহরের দক্ষিণ মাইঠা এলাকার বাড়ি থেকে পুলিশ লাইনসে আনা হয় মিন্নিকে। তখন তার সঙ্গে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাদের আনা হয় বলে শুরুতে পুলিশ জানায়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার পুলিশ সুপার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন এর আগে জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সকালে গাড়িতে করে মিন্নি ও তাকে পুলিশ লাইনসে আনে। মামলার তদন্তের জন্য বাসা থেকে লাইনসে নিয়ে আসা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রিফাত হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী এক নম্বর সাক্ষী মিন্নি। পুলিশ লাইনসে এনে তাকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে।
এরপর শুক্রবার বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে পুলিশ জোরজবরদস্তি করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে মিন্নির বাবা।
এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু সমালোচনার পর বরগুনা ও ঢাকার আইনজীবীদের একটি অংশ মিন্নির পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। আজ সোমবার আদালতে মিন্নির পক্ষে তার জবানবন্দি প্রত্যাহার ও উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়।