আর মাত্র কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ। ইতোমধ্যে স্বপ্নচারী শিক্ষার্থীরা এ যুদ্ধে নামতে প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুসারে দেশের সব পাবলিক, প্রকৌশল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরিসহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আসন রয়েছে ২১ লাখ ২০ হাজার ৯২৫।
তবে পাবলিক, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে মোট আসন ৬৪ হাজার। মূলত এ ৬৪ হাজার আসনে হবে ভর্তিযুদ্ধ।
ইউজিসি সূত্র মতে, এবার সব মিলিয়ে আসন বেড়ে অন্তত ২৩ লাখ হতে পারে। অন্যদিকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯। এ হিসাবে প্রায় অর্ধেক আসই শূন্য থাকবে।
এদিকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬। শুধু বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৩ হাজার ৭৫২। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
অথচ মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন মাত্র সাড়ে ১৬ হাজার। ফলে মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হবে।
ফল ও আসন বিশ্লেষণ করে মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্টরা জানান, মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে। একই অবস্থা হবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও।
ইউজিসির ২০১৭ সালের ৪৪তম প্রতিবেদন অনুসারে, বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট ও ডুয়েট- এ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন পাঁচ হাজার ৭৭৪। এর মধ্যে বুয়েটে সর্বাধিক দুই হাজার ১২০ আসন রয়েছে।
গত কয়েক বছরের চিত্রে দেখা গেছে, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে জানা গেছে, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ৪৭ হাজারের বেশি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই লাখ ৬২ হাজার।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন কলেজে অনার্সে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ আসন রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক হয়ে রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। এসব কলেজেও রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ আসন।
দেখা গেছে, বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিষয়ের জিপিএ-৫ পেয়েছে সাড়ে ৮ হাজার ৬১৫ শিক্ষার্থী। আসন ও ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আট সাধারণ বোর্ডের বাণিজ্য, মানবিক ও ব্যবসা থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া আট হাজার ৬১৫ জনের সঙ্গে মেডিকেল ও প্রকৌশলে ভর্তিবঞ্চিত অন্তত ১৫ হাজার শিক্ষার্থী সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করবে। এতে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে।
ইউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার মোট জিপিএ-৫ এর তুলনায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে আসন সংখ্যা বেশি। তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে।
জানা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাধিক প্রায় সাত হাজার আসন রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চার হাজার ৭২২, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চার হাজার ৬৭৪, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজার ২৫২, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজার ৭৬৫ আসন।
অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে আড়াই লাখের বেশি। যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না, তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ ভর্তি হবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আগের বছরগুলোর পরিসংখ্যান বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক আসন খালি থাকে।
এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি যুদ্ধ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।