ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, সারা দেশের মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত। ঘরে ঘরে মানুষ আক্রান্ত। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নির্মূলে এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর ওষুধ আনবেন। কীভাবে আনবেন, সে প্রক্রিয়া বলুন।
এডিস মশা নির্মূলে এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর ওষুধ আনার প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুপুর ২টার মধ্যে দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তা জানাতে বলেছেন।
আদালত বলেন, ঘরে ঘরে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। অনেকে হাসপাতালে যায় না। সবাই হাসপাতালে গেলে এ সংখ্যা আরও বেশি হতো।
বেলা ১১টার দিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য গত ২২ জুলাই নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আদেশ অনুযায়ী আজ সকাল সাড়ে ১০টায় দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হাইকোর্টে হাজির হন। আদালত তাদের বক্তব্য শোনেন। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত মৌখিকভাবে এ আদেশ দেন।
শুনানিতে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া ছড়াচ্ছে। আফ্রিকার মতো আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা ওষুধ এনছি। তবে তা কার্যকর হচ্ছে না।
আদালত বলেন, আপনারা যখন দেখলেন ওষুধ কাজ করছে না তখন নতুন পদক্ষেপ নেননি কেনো? দ্রুত কিভাবে ওষুধ আনা যায় সে ব্যবস্থা নিয়ে দুপুর ২টার মধ্যে আমাদের জানান।
এর আগে মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ১৪ জুলাই হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা আকারে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিবাদীদের জানাতে বলা হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফায়রোজ দুই সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ সম্পর্কিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। তবে সে প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হননি হাইকোর্ট। তাই এ কার্যক্রমের বিষয়ে জানাতে দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
আইনজীবীর মাধ্যমে হলফনামা জমার নির্দেশ দিয়ে আদালত বেলা দুইটা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর আগে আদালতে হাজির হন ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (ডা.) মো. শরীফ আহমেদ ও ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন।
আদালতে ঢাকা উত্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু ও দক্ষিণের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।